আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নীলফামারীর চারটি নির্বাচনী এলাকায় (সংসদীয় আসন-১২, ১৩, ১৪ ও ১৫) মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের সমর্থন পেতে তারা এরই মধ্যে নানা তৎপরতা চালাচ্ছেন। অনেকেই কেন্দ্রের সবুজ সংকেতের জন্য সিনিয়র নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় নিয়মিত ইফতার মাহফিলও করছেন। কেউ কেউ পোস্টার ও লিফলেটের মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাচ্ছেন। নীলফামারী-২ আসনে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বিপরীতে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান জামান। অন্যদিকে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মনিরুজ্জামান মন্টু স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত হচ্ছেন।

একইভাবে নীলফামারী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নাম শোনা যাচ্ছে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলামের। অর্থাৎ এ দুটি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সঙ্গে কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে জামায়াত প্রার্থীদের।

নীলফামারী-১ আসনে আবারও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান এমপি মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার এগিয়ে রয়েছেন। দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে তার। অবশ্য এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. মনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনিবাহী সংসদের উপ-সাহিত্য সম্পাদক সরকার ফারহানা আখতার সুমিও। অন্যদিকে, ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে বিএনপির শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের নাম আলোচনায়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে মামলা থাকায় দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

সেক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারলে তার বাবা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে আলোচনা। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাবেক সংসদ সদস্য জাফর ইকবাল সিদ্দিকী। গত নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। নীলফামারী-২ আসনে একক প্রার্থী হবেন আওয়ামী লীগের এমপি আসাদুজ্জামান নূর। নিয়মিত গণসংযোগ, দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান জামান না জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মনিরুজ্জামান মন্টু তা নিয়ে নেতা-কর্মীরা ধোঁয়াশায়।

তবে এ এলাকাটি জামায়াত প্রভাবিত হওয়ায় অনেকেই বলছেন, জামায়াতের প্রার্থীই জোটের মনোনয়ন পেতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে ছাড় দেবেন না স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নীলফামারী-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা এবারও মনোনয়ন চাইবেন। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। তিনি নিয়মিত জলঢাকা-কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়নের চেষ্টা করছেন দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ হোসেন। ২০ দলীয় জোট থেকে জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র ফাহমিদ ফয়সল চৌধুরী কমেট প্রার্থিতা প্রত্যাশা করছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলামও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারেন।

নীলফামারী-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তিনজন। তারা হলেন দলের জেলা সভাপতি ও পৌর মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী কর আইনজীবী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম আমির এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা।

তিনজনই নিজেদের মতো করে তৎপরতা চালাচ্ছেন। কেন্দ্রেও তারা দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ আসনে ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থী সৈয়দপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি ও বর্তমান সৈয়দপুর পৌরসভা মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার। এর আগে এ আসন থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলার আহ্বায়ক বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ শওকত চৌধুরী।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn