বার্তা ডেস্ক :: এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক এমডি পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) ‘বান্ধবী’ অবন্তিকা বড়াল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ডাকে সাড়া দেননি। নোটিশ প্রাপ্তির পরও হাজির হননি দুদক কার্যালয়ে। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছিল। মামলার আলোচিত আসামি পিকে হালদারের সঙ্গে যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে অবন্তিকার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক উপপরিচালক তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরের নোটিশ অবন্তিকা বড়ালের রাজধানীর ধানমন্ডির ফ্ল্যাটে পাঠানো হয়। সোমবার সকাল ১০টায় হাজির হতে বলা হয় দুদকে। চিঠি পাওয়ার পরও তিনি যথাসময়ে হাজির হননি। ব্যক্তিগত কোনো সমস্যার কারণে হাজির হতে পারেননি বা কবে হাজির হতে পারবেন- এ বিষয়েও লিখিত বা ফোনে দুদককে জানানো হয়নি।

অবন্তিকার কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হলে অভিযোগ সম্পর্কে কোনো বক্তব্য নেই বলে গণ্য করা হবে। পরবর্তী সময়ে দুদক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বান্ধবীদের সম্পদ ক্রোকের আবেদন

পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়ালের ফ্ল্যাটসহ দু’টি ফ্ল্যাট ক্রোকের আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে। মঙ্গলবার দুদক উপপরিচালক তদন্ত কর্মকর্তা মো. সালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত আবেদনটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজের কাছে পেশ করা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডির ১০/এ সাত মসজিদ রোডে ৩৯ নম্বর বাড়ির ১২/ই ফ্ল্যাটটি এই অবন্তিকার নামে। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৬ নং রোডের পুরাতন ২১ নং ও নতুন ১৭ নং প্লটে নির্মিত ১৪ তলা বাড়ির সপ্তম তলায় ২ হাজার ৬০৩ বর্গফুটের এ-৭ নং ফ্ল্যাটটিও ক্রোকের আবেদন করা হয়েছে।

জানা গেছে, পি কে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা বড়াল রাজধানীর ধানমন্ডির ১০/এ সাত মসজিদ রোডে ৩৯ নম্বর বাড়ির ১২/ই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সোমবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদক থেকে ডাকা হলে তিনি যথাসময়ে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হননি। তিনি বর্তমানে পলাতক আছেন। এরই মধ্যে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম হাইকোর্টে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পি কে হালদারের ৭০-৮০ জন বান্ধবী আছেন যারা তার অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে নানাভাবে জড়িত। এরপরই দুদক প্রশান্তের বান্ধবীর খোঁজে মাঠে নামে। এরই মধ্যে একাধিক বান্ধবীর খোঁজ মিলেছে। অন্যদেরকে খোঁজা হচ্ছে। ২৭১ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দেড় হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গত ৮ জানুয়ারি মামলা করেন। মামলায় তদন্ত করছেন উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন। এই মামলা দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত প্রশান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড ও পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে।-পূর্বপশ্চিমবিডি

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn