ফেনীর পরশুরামের ছেলে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী। ঢাকায় এসে হন সম্রাট। গড়ে তোলেন নিজের সাম্রাজ্য। মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি হওয়ার পর পুরো ঢাকাতেই ছড়িয়ে পড়ে তার রাজত্ব। বিশেষ করে মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় ছিল তার একক নিয়ন্ত্রণ। ক্যাসিনো থেকে চাঁদাবাজি সর্বত্রই ‘সম্রাট ভাই’। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান শুরুর পরপরই সম্রাটকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে নানা গুঞ্জন। কেউ বলেন, তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে, কেউ বলেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।কারও কাছে তথ্য ছিল, তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন। সব গুঞ্জন শেষ করে দিয়ে গত রাতে গ্রেপ্তার হন সম্রাট। কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করেছে আনুষ্ঠানিকভাবে এমনটাই জানানো হয়েছে। এখন তাকে নিয়ে অভিযান চলছে। তোলা হবে আদালতে। মামলা হবে একাধিক। কাকতালীয় কি না কে জানে- নিজ জেলা ফেনী লাগোয়া চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার হলেন সম্রাট। পতনের আগে আগে রাজা কি নিজ পিতৃভূমির কাছে ফিরে গিয়েছিলেন। সম্রাট এমন এক সময় গ্রেপ্তার হলেন যখন ‘ফেনী নদী’ও রয়েছে আলোচনার শীর্ষে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক বলে ফেনী নদী থেকে ১.৮৬ কিউসেক পানি নিতে পারবে ভারত। তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে দুই প্রতিবেশির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোন সুরাহা না করেই ভারতকে এবার ফেনী নদী থেকে পানি নেয়ার অনুমোদন দিলো বাংলাদেশ। এ নিয়ে বাংলাদেশের অনেকের মধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার বলছে, মানবিক কারণেই এই স্মারকে সই করেছে বাংলাদেশ। পরিবর্তিত রাজনৈতিক হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলই অবশ্য এ নিয়ে তীব্র কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। যদিও রিজভী আহমেদ যথারীতি একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

সম্রাটের স্ত্রীরা কে কোথায়?

সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগ নেতা সম্রাটের ব্যক্তিজীবন নিয়ে জনমনে নানা কৌতূহল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের জানা যায়, যুবলীগ নেতা ইসমাইল  হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের তিনজন স্ত্রী রয়েছেন। একজন বিদেশি স্ত্রী আছে বলেও জানা গেছে। সম্রাটের পরিবার সূত্র জানা গেছে, সম্রাটের দুই স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। প্রথম পক্ষে সম্রাটের এক মেয়ে। তিনি পড়াশোনা শেষ করেছেন। সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী মহাখালীর ডিওএইচএসে থাকেন। তার এক ছেলে। তিনি মালয়েশিয়ায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সিঙ্গাপুরে সম্রাটের বিদেশি একজন স্ত্রী আছে বলেও পারিবারিক সূত্র জানায়। তবে ওই স্ত্রীর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সম্রাট মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসাতেই স্থায়ীভাবে থাকতেন।   উল্লেখ্য, আজ ভোর ৫টার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার সহযোগী যুবলীগে নেতা এনামুল হক আরমানকেও গ্রেফতার করে র‌্যাব।

দু বছর দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় যেতেন না সম্রাট

দু বছর বাসায় যান না যুবলীগ নেতা সম্রাট। এ সময় থাকতেন কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে নিজ কার্যালয়ে। প্রথম আলো প্রকাশিত খবরে আরও জানা যায়, যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট ২ বছর ধরে ঢাকার মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় যেতেন না। তবে গাড়ির চালকের খরচসহ পরিবারের সব খরচ দিতেন।  পারিবারিক সূত্র জানায়, সম্রাটের দুই স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। প্রথম পক্ষে সম্রাটের এক মেয়ে। তিনি পড়াশোনা শেষ করেছেন।সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী মহাখালীর ডিওএইচএসে থাকেন। তাঁর এক ছেলে। তিনি মালয়েশিয়ায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। সম্রাটরা তিন ভাই। এক ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। আরেক ভাই সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। সম্রাটের মা ভাইদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। সম্রাটদের গ্রামের বাড়ি ফেনীতে। উল্লেখ্য, আজ ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের পুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট ও যুবলীগের আরেক নেতা আরমান আলীকে আটক করে র‌্যাব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn