বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের গোপন নিয়ম ও নীতিমালা ফাঁস করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান। ফেসবুকের ২০০ কোটি ব্যবহারকারী কী পোস্ট করতে পারবে আর কোনটি পারবে না এ তথ্য নিজেদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে গার্ডিয়ান।পত্রিকাটি ফেসবুকের প্রায় ১০০ ট্রেনিং ম্যানুয়াল, স্প্রেডশিট এবং ফ্লোচার্ট পরীক্ষা করে দেখেছে। এগুলোতে সহিংসতা, ঘৃণা সৃষ্টিকারী বক্তৃতা, সন্ত্রাসবাদ, পর্নোগ্রাফি, বর্ণবাদ ও নিজের ক্ষতি করবে এমন পোস্টের বিষয়ে কী করতে হবে তার নীল নকশা রয়েছে। এসব নীতিমালায় ম্যাচে বাজি ধরা এবং মানুষের মাংস খাওয়ার বিষয়ে নীতিমালা দেওয়া আছে।

ফেসবুকের এই নথিতে ব্যবহারকারীদের আচরণবিধি এবং নিয়মের প্রাথমিক রূপ পাওয়া যায়। এ বিষয়গুলো নিয়ে ইউরোপ ‍ও যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুক রাজনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। ফেসবুকের এক সূত্র জানায়, ফেসবুক তার কনটেন্টের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে না। এই সাইট খুব দ্রুত উন্নত হচ্ছে। এর ব্যবহারকারীও বাড়ছে। অন্য এক সূত্র থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ফেসবুককে ৬০ লাখ ৫০ হাজার রিপোর্ট নিয়ে কাজ করতে হয়। এর মধ্যে ভুয়া অ্যাকাউন্টও রয়েছে। ফেসবুকের এ নীতিমালায় কিছু বিষয় আছে, যা ইতিমধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। যেমন, কেউ বলল ট্রাম্পকে খুন করো। এ ধরণের কথা অবশ্যই পোস্টে থাকা যাবে না। কিন্তু এর বাইরে কেউ যদি অশালীন ভাষায় গালি দেয় সেটা রাখা যাবে। এ রকম আরো কিছু নীতি রয়েছে যেমন-

১. ভয়ংকর মৃত্যুর ভিডিও যদি সচেতনতামূলক কাজে ব্যবহার করা হয় তবে তা রাখা যাবে।

২. বিরক্তিকর লিখে পশুর ওপর নিপীড়নের ভিডিও রাখা যাবে।

৩. হাতে আঁকা নগ্ন ছবি থাকবে। তবে ডিজিটাল ছবি রাখা যাবে না।

৪. গর্ভপাতের ছবি বা ভিডিও রাখা যাবে, যদি না সেখানে নগ্নতা থাকে।

ফেসবুক স্বীকার করেছে যে, সব ধরণের ভিন্নমত ও বিরক্তিকর কনটেন্ট আমাদের সামাজিক আদর্শকে ক্ষুন্ন করে না। ফেসবুকের গ্লোবাল পলিসি ম্যানেজমেন্টের প্রধান মনিকা বিকার্ট জানান, প্রায় দুইশ কোটি ব্যবহারকারী আছে আমাদের। কোন বিষয়ে সবাই সম্মতি প্রকাশ করেছে তা বের করা খুবই কঠিন।

ফেসবুক জানায় যৌন নিপীড়ন ছাড়া শিশুদের অন্য নিপীড়নের ভিডিও তাদেরকে সাহায্য করার জন্যই দেওয়া যায়। এমনকি তা পশু নিপীড়নের ভিডিওর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে অবশ্যই বিরক্তিকর বা ডিস্টার্বিং কথাটা লেখা থাকতে হবে। ফেসবুক মনে করে সচেতনতা তৈরির জন্য এ ধরণের ভিডিও তাদের ওয়েবসাইটে রাখা যায়। মানুষ তার হতাশা প্রকাশ করতে সহিংস ভাষা ব্যবহার করতেই পারে। এটা খারাপ কিছু নয় এবং তা নিরাপদ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn