টিভি পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। পর্দার বাইরে তিনি একজন একজন মমতাময়ী মা। একমাত্র মেয়ে সায়রাকে কিভাবে তিনি আগলে রেখেছেন, এটা শোবিজ অঙ্গনের সবারই জানা। নিজের কাজের চেয়েও মেয়েকে সবসময় অগ্রাধিকার দেন বাঁধন। যাতে সায়রা সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে।কিন্তু বাঁধনের কাছেই নাকি সায়রার ভবিষ্যৎ অনুজ্জ্বল! এমন অভিযোগ তুলেছেন বাঁধনের প্রাক্তন স্বামী তথা সায়রার বাবা সনেট। তিনি জানান, মেয়ে সায়রাকে তিনি কানাডা নিয়ে পড়াশুনা করাবেন। সেখানেই মানুষ করবেন। কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী সায়রা এখনো বাঁধনের কাছেই থাকার কথা। মেয়েকে কাছে রাখার জন্য তাই বাঁধন বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।অভিনেত্রী বাঁধন নয়, একজন মা বাঁধনের হয়ে কথা বলছেন অনেকেই। শনিবার  বিকালে ফেসবুকের মাধ্যমে বাঁধনের পক্ষ নিয়ে বেশ কিছু কথা বলেছেন আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী বন্যা মির্জা। তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘আমার পক্ষ নেয়া নিয়ে নানান মানুষের সমস্যা আছে। অন্যের পক্ষ নেয়া নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। যে কেউ যে কোনো পক্ষই নিতে পারেন। সমস্যা হলো তারা বোঝেন না যে আমি তাদের পক্ষ না নিলেই শত্রু হয়ে যাই না।সারাক্ষণ শুনতে হয় আমি ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ সিনেমার পক্ষ নিলাম কেন? আমি ‘রিজওয়ান’-এর পক্ষ নিলাম কেন? তাতে আমি বিদ্রোহী বা বিপ্লবী খেতাবও পেয়ে গেলাম। যদিও কেন রোহিঙ্গা নিয়ে কিছু লিখছি না কিংবা কেন পাহাড়িদের নিয়ে লিখছি এসব অভিযোগ আছে। সেরকম ক্ষেত্রে পাহাড়িদের নিয়ে লিখলে ‘বিদ্রোহী’ শুনতে হয় না, কটাক্ষ করে হলেও। আবার রোহিঙ্গা নিয়ে না লেখাতে তিরস্কারই শুনতে হয়। এসব কথা আমার সরাসরিই শুনতে হয়।আমি যে উত্তর করি তা নয়। চুপই থাকি। কিন্তু মাঝেমধ্যে আমি আসলেই পক্ষ নির্ধারণ করি। শক্তভাবেই করি। এবং আমি আমার অবস্থানে আড় থাকি। যেমন আমার বন্ধু বা সহকর্মীর পরিবার নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে আমি বন্ধুর পক্ষ নিয়ে থাকি। অন্যদের এসব মন্তব্য আমার তখন অযথা মনে হয়। তেমন ঠিক এই মুহূর্তে আজমেরী হক বাঁধনের পক্ষ নেবার প্রয়োজন পড়েছে আমার। এই প্রশ্নে আমার অন্যান্য সহকর্মীর অবস্থানও আমার ভীষণ ভাল লাগছে।

বাঁধনকে লোভী বলেছেন তার স্বামী, মাশরুর সিদ্দিকী সনেট। যথার্থ বলেছেন তিনি, লোভী তো বাধন অবশ্যই! সংসারের লোভ তো মেয়েদের বড় সমস্যা! থাকাই ঠিক না! স্বামী সন্তানসমেত যে সংসার তার লোভ মেয়েদের সনাতন! কী আর করা! সেই লোভই বাঁধনের জীবনের কাল হলো।বাঁধন তার বাবার বাড়িতে থাকেন। কন্যা সায়রাসমেত। যখন থেকে বাঁধনের স্বামী বাঁধনের সঙ্গে থাকে না তখন বা তার পরবর্তী সময়ে বাঁধনের কন্যা সায়রা আমাদের সকলের কন্যা হয়ে গেছে। বাঁধন দীর্ঘ সময় কাজ করেননি সায়রার জন্য। আজও ভোর ৫টায় উঠে সায়রাকে স্কুলে দেয়া-আনার কাজটা তিনিই করে থাকেন। বাঁধন তার মায়ের বাড়িতে থাকেন বিধায় সায়রাকে রেখে অনায়াসে পেশাগত কাজ করে যেতে পারতেন। তিনি তা করেননি। শতভাগই করতে চেয়েছেন মেয়ের জন্য।অথবা বাঁধন বেশিই করেন, কারণ বাবা ও মায়ের দায়িত্ব তিনি একা পালন করেছেন। তবুও বাবা সম্পর্কে একটুকু কটু কথা মেয়েকে বলেননি। যখন দেখতে চেয়েছেন তখনই সায়রার বাবা মেয়েকে দেখেছেন। নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। এমনকি ওই লোকের আবার বিয়ের পরও। বিয়ের কথা গোপন রেখে, বাঁধন ও সায়রারা কে নিয়ে মালয়েশিয়া ঘুরতে গেছেন।

আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি বাঁধনকে। ফলে ওই লোকের বর্তমান স্ত্রী যা যা ফোনে বলেছেন তা আমি শুনেছি। চাইলে আপনারাও শুনতে পারেন। মেয়েকে বাঁধন ঠিকমতো মানুষ করতে পারছেন না বলে তার (সনেটের নতুন স্ত্রী) দাবি! তার কাছে কানাডায় থাকলে সায়রা মানুষ হবে! কী অদ্ভুত কথা!ছোট্ট সায়রাকেও বিষিয়ে দেবার চেষ্টা করছেন তারা। অভিনেতা-মায়েরা নাকি ভাল নয়! সায়রার কথা ভেবে অনেক কিছুই জানানো যাচ্ছে না। আরও কারণ সায়রা তার বাবাকে অসম্মানিত হতে দেখুক তা আমাদের কারো কাম্য নয়। পরিশেষে বাধ্য হয়ে পারিবারিক আদালতে কন্যার কাস্টডি পেতে মামলা করতে হয়েছে বাঁধনকে।বাঁধন খারাপ মা তা প্রমাণ কোনোভাবেই সহজ হবে না। বাঁধনের মতো মা সবাই হতে পারবে কিনা তাও আমি জানি না। কিন্তু আমি জানি যে, যেসব অভিনেতা-মা আছেন, বা যাঁরা টেলিভিশনে কাজ করেন তাঁরা প্রত্যেকে একেকজন অসাধারণ মা। কাছে থেকে দেখি, তাই আমি জানি। যাহোক, বাঁধন মেয়ের কাস্টডি পাবেন, তা নিয়ে আমার সংশয় নেই। কিন্তু সায়রার জন্য আমার চিন্তা হচ্ছে যেন আশপাশের কোনো ক্ষুদ্রতা তাকে স্পর্শ না করে। সায়রার জন্য ভালবাসা। ভালো থাকিস মা, সোনা বাচ্চা আমাদের!’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn