বার্তা ডেস্ক :: বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের জি টু জি (সরকার টু সরকার) চুক্তি হলেও এর প্রভাব পড়ছে না বাংলাদেশের অভিবাসীদের ক্ষেত্রে। একজন বাংলাদেশি অভিবাসীকে বিদেশে পাড়ি জমানোর জন্য গড়ে ব্যয় করতে হচ্ছে চার লাখ ১৬ হাজার ৭৮৯ টাকা। সে অনুপাতে তাঁদের মাসিক গড় আয় হচ্ছে ২৩ হাজার ৬৯৩ টাকা। অদক্ষ অভিবাসীর ক্ষেত্রে বিদেশ যাওয়ার ব্যয় দাঁড়াচ্ছে চার লাখ ৭৭ হাজার ৯২৭ টাকা। দক্ষ অভিবাসীদের ক্ষেত্রে চার লাখ ২৭ হাজার ২১৭ টাকা। তবে গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রে সেই গড় নিয়োগ ব্যয় দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৯৬৪ টাকা। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে প্রকাশিত এক জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সব থেকে বেশি গড় ব্যয় সিঙ্গাপুর যেতে, খরচ হয় পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার ২৪১ টাকা। সেখানে মাসিক গড় আয় ৩৮ হাজার ১২৯ টাকা। আর সব থেকে কম খরচ ওমানে যেতে, তিন লাখ আট হাজার ৪৭ টাকা। আর মাসিক গড় আয় ১৯ হাজার ১৭৭ টাকা।

অভিবাসন জরিপ ব্যয় ২০২০-এ দেখা গেছে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের মোট অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা ছিল ২৭.৩ লাখ। এর মধ্যে ১৪.৮ শতাংশ ছিল নারী, বাকি ৮৫.২ শতাংশ ছিল পুরুষ। মোট নারী অভিবাসীদের মধ্যে ৮৩.৮ শতাংশ ছিল দক্ষ, বাকি ৮.৭ শতাংশ অদক্ষ। এ ছাড়া ৭.৫ শতাংশ দক্ষ কর্মী ছিল। পুরুষ অভিবাসীদের মধ্যে ৭৭.৪ শতাংশ দক্ষ, ২০.১ শতাংশ অদক্ষ, বাকি ২.৪ শতাংশ পুরুষ গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। জরিপে বলা হয়, অভিবাসী পর্যায়ে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ ব্যয় ও চাকরির মাসিক আয়ের অনুপাত ১৭.৬ শতাংশ। নিয়োগ ব্যয় ও মাসিক কর্মসংস্থান আয়ের অনুপাতে পার্থক্য দেখা যায় নারী ও পুরুষ কর্মীদের মাঝে। পুরুষদের আয়ের অনুপাত ১৯.১ শতাংশ আর মহিলাদের আয়ের অনুপাত ৫.৬ শতাংশ। তবু নারীদের নিয়োগ ব্যয় উদ্ধার করতে সময় লাগে ৫.৬ মাস আর সেখানে পুরুষদের ব্যয় উদ্ধার করতে সময় লাগে ১৯.১ মাস।

জানতে চাইলে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘আমরা এত দিন ধরে যে বলে আসছিলাম বাংলাদেশি অভিবাসীদের গড় নিয়োগ ব্যয় বেশি, সেটি দালিলিকভাবে প্রমাণ হলো বিবিএসের করা এই জরিপের মাধ্যমে। এখন একজন শ্রমিকের বাইরে কাজ করতে গেলে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগে, তবে তারা সে হিসাবে আয় করতে পারে না। যে মেয়াদে কাজ করতে যায়, সেই মেয়াদও শেষ হয়; ফলে তারা আনডকুমেন্টেড হয় এবং এ কারণে তাদের বেতন আরো কমে যায়। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি, একজন অভিবাসীর গড় নিয়োগ ব্যয় কোনোভাবেই ৬০ হাজার টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। আর তা না হলে তারা পড়বে চরম দুর্ভোগে।’

এই সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অভিবাসন ব্যয় কমাতে হবে, আর এ জন্য আমাদের শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, ভিসা কেনাবেচা বন্ধ করতে হবে, পাশাপাশি সিন্ডিকেট নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। আর অভিবাসী নিয়োগের ক্ষেত্রে যারা ইথিক্যাল নিয়োগ দিতে পারবে, তাদেরকেই সেই দায়িত্ব দিতে হবে, আর তা হতে হবে দুই দেশের ক্ষেত্রেই।’ সৌজন্যে : কালের কণ্ঠ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn