অপহৃত ভাগ্নে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভের সন্ধানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত কার্যক্রমে থাকবেন বলে জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। গতকাল দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, সৌরভকে ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত তিনি নিজেই পুলিশের উদ্ধার কাজে সহযোগিতার  অংশ হিসেবে তদন্তে নামবেন। ওই স্ট্যাটাসে সোহেল তাজ লেখেন, সৌরভ ফিরে না আসা পর্যন্ত পুলিশের উদ্ধার কাজে সহযোগিতার অংশ হিসেবে আমি নিজেই তদন্তের কাজে নামছি। এরই ধারাবাহিকতায় সন্ধ্যা ছয়টায় তিনি ফেসবুক লাইভে আসেন। এ সময় সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান ও বাবা মো. ইদ্রিস আলমও উপস্থিত ছিলেন। তারা ফেসবুক লাইভে সৌরভকে কারা তুলে নিয়ে গেছেন সেসব তথ্য দিয়েছেন। সে সঙ্গে পুলিশের অগ্রগতি সম্পর্কেও জানিয়েছেন। সোহেল তাজের করা ফেসবুক লাইভে সৌরভের মা জানান, ২০১৮ সালের ১৬ই মে র‌্যাব-১ পরিচয় দিয়ে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
পরবর্তীতে তারা সৌরভকে ফেরতও দেয়। ফিরিয়ে দেয়ার সময় র‌্যাব সদস্যরা তাকে অক্ষত অবস্থায় পরিবারের কাছে দিয়ে গেছে মর্মে লিখিত নেয়। এ সময় সৌরভদের বাড়ির প্রতিবেশীদেরও ডেকে জানিয়ে দেয় যে, তাকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। সৌরভের মা জানান, বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে গেলেও র‌্যাবের পরিচয় দেয়া ব্যক্তিরা কিছুদিন পর থেকেই নানাভাবে যন্ত্রণা শুরু করছিল। শেষতক সৌরভকে চাকরি দেয়ার কথা বলে আবার নিয়ে যায় বলে দাবি করেন সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান। সোহেল তাজের পারিচালনায় ওই ফেসবুক লাইভে পুলিশের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সৌরভের বাবা বলেন, পুলিশের সঙ্গে কথা চলছে। তারা আমাদের কাছে কোনো ফল পেয়েছি কিনা জানতে চেয়েছে। তিনি বলেন, আমরা পুলিশকে সৌরভ যে সবশেষ আগোরার সামনে দাঁড়িয়েছিল সেই সিসিটিভি ফুটেজও দিয়েছি। সেই ফুটেজে আরো দেখা গেছে, কালো রঙের একটি প্রাডো গাড়িতে করে ৪-৫ জন সৌরভকে তুলে নেয়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আকুল আবেদন জানিয়েছি। আমার ছেলে যেন আমাদের কাছে সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসে এই কামনা করেছি।

এদিকে সৌরভ নিখোঁজের বিষয়টি অবগত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।  সে সঙ্গে সৌরভ উদ্ধার হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল বলেন, তিনি (সোহলে তাজ) ঘোষণা দিয়েছেন তার ভাগ্নেকে নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। সে জন্য থানায় একটা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। আমি মনে করি, তিনি যদি কোনোখানে গিয়ে থাকেন, তা হলে ফিরে আসবেন। আর না হলে জিডি অনুযায়ী আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা আছেন তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এই রকম শব্দ আমি শুনিনি। তিনি বলেন, আমাদের সম্মানীত তাজউদ্দীন সাহেবের ছেলে এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী সোহেল আমাকে ফোন করে এ ঘটনার কথা বলেছেন। আমি শুনে পুলিশ কমিশনারকে যা বলার বলে দিয়েছি। তিনি কাজ করছেন। হয়তো তার খোঁজ পাওয়া যাবে এবং তিনি বেরিয়ে আসবেন। মন্ত্রী বলেন, এখানে দুটোই হতে পারে- সে কোনোখানে গিয়ে থাকতে পারে; কিংবা কেউ নিয়ে গিয়ে থাকতে পারে। আশা করি, উদ্ধার হয়ে যাবে, যেহেতু পুলিশি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn