আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভারতের যে দল বা জোটকে সেদেশের জনগণ নির্বাচিত করবে সে দল বা জোটের সঙ্গেই সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের। তাই ভারতের জনগণ যে জোট বা দলকে নির্বাচিত করবে সেই জোট বা দলের সঙ্গে আমরা কাজ করব। গতকাল সচিবালয়ের নিজ মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, রিভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে আমার যে সাক্ষাত সেটা অনেকটাই সৌজন্য সাক্ষাত। ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে। আরো নতুন প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কানেকটিভিটির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে বাস চলাচল রয়েছে। ভারতের গোহাটি-আসামের সঙ্গে ও সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে এই সম্পর্ক আরো জোরদার করতে চাই। এসব বিষয় নিয়েই রিভা গাঙ্গুলীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ভারত থেকে বাস ও ট্রাক আনা হয়েছে। আখাউড়া-কিশোরগঞ্জ, আখাউড়া থেকে ময়নামতি পর্যন্ত ফোর লেন ও ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ বন্ধু প্রতিম দেশ দু’টির মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরো নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে। দু’দেশই তাদের পারস্পারিক স্বার্থের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, দেশ দু’টির মধ্যে অমীমাংসিত যেসব সমস্যা রয়েছে, সেসব সমস্যা সমাধানের জন্যও সেই সরকারের কাছে সহযোগিতা আশা করি। তিনি বলেন, আশার যেখানে শেষ, সেখানে হতাশার শুরু এবং তা আরো গভীর হয়। আশা ছাড়লে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান হতো না। চেষ্টা ছিল বলেই সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। কোন সমস্যা সমাধানের জোর চেষ্টা থাকলে উভয় দিক থেকে সমঝোতার পথ প্রশস্ত হয়। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল হস্তান্তর হয়েছে, সীমান্ত সমস্যার সমাধান যেভাবে হয়েছে, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বন্টন সমস্যারও সমাধান সেভাবেই হবে। ভারতের নতুন সরকার এ সমস্যা সমাধান বাস্তব রূপ দেবেন, সেই আশা আমরা করি। ধানের ক্ষেতে আগুন দেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ধানের ক্ষেতে আগুন দেয়ার বিষয়টি স্যাবোটাজ বা সরকারের সুনামহানি করার জন্য করা হচ্ছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, যে কোন বিষয়ে সংকট দেখা দিতে পারে। কিন্তু এভাবে ধানের ক্ষেতে আগুন জ্বালিয়ে সংকটের কোন সমাধান করা সম্ভব নয়। বিষয়টি জানানোর জন্যও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দলীয়ভাবেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাস্তবসম্মতভাবে যে কোন সংকটের সমাধান করতে হবে। ধানের ক্ষেতে আগুন দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার এ সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। কারণ সরকার কখনো চাইবে না যে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হোক। সরকার এ সমস্যা সমাধানে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আইনগত দিক থেকে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা, তা নির্বাচন কমিশন দেখবে। এ ব্যাপারে সরকারের কিছু বলার বা করার নেই। এর আগে রিভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn