মতিউর, মুকুট ও জগলুলে’র ঐক্যে ফাটল!
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ব্যারিষ্টার এম, এনামূল কবীর ইমন খেদাও ইসুতে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহ্বাজ মতিউর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট ও আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য আয়ূব বখত জগলুল এই তিন নেতার মধ্যে ঐক্যমত গঠিত হয়েছিল। গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থী ইমনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ‘পণ’ করেছিলেন তিন জন। বছর পেরুনোর আগেই সেই ঐক্যে দৃশ্যত এখন ফাটল ধরেছে। তাদের তিনজনের একের প্রতি অপরের অবিশ্বাস ও অঘোষিত বিরুধী অবস্থান দেখে নেতা-কর্মীরা তাই ভাবছেন। সবার একই প্রশ্ন জেলা আওয়ামীলীগ রাজনীতি কি তাহলে অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে? গঠন হতে যাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে ঘিরে তাই নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মুখোমুখি ছিলেন জেলা আ.লীগের দুই সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুট ও আয়ূব বখত জগলুল। পরে অবশ্য তাদের আর রাজনৈতিক কারণে চরম বিরোধিতা করতে দেখা যায় নি। ২০১০ সালের পরবর্তী সময়ে নূরুল হুদা মুকুটের সঙ্গে মতিউর রহমানের বিরোধ দেখা দেয়। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আবার তাদের মধ্যে মিল দেখা যায়। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন পান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন। দলীয় সমর্থন না পেয়ে নির্বাচনে দাঁড়ান নূরুল হুদা মুকুট। তখন ইমনবিরোধী মতিউর রহমান, নূরুল হুদা মুকুট, আয়ূব বখত জগলুল ঐক্যবদ্ধ হন। এসময় সভা, সমাবেশ, দলীয় কর্মসূচিতে এই তিন নেতা তাদের মধ্যে ঈমানি ঐক্যের কথা ঘোষণা করেন। বেশ কিছুদিন তাদের মধ্যে গভীর রাজনৈতিক সম্পর্কও ছিল। কিন্তু সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচনের আগ্রহ আছে পৌর মেয়র আয়ূব বখত জগলুলের। জগলুলের অনুসারীরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছেন। এমন খবরে জেলা আ.লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের শিবিরে কিছুটা হতাশা নেমে আসে। অপরদিকে, বিভিন্ন স্থানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুটের সংবর্ধনা সভায় মতিউর রহমান উপস্থিত থাকলেও আয়ূব বখত জগলুল উপস্থিত না থাকার বিষয়টি – নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই তিন নেতার ঐক্যে টানাপোড়েন চলছে। মূলত জেলা আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। আ.লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য আয়ূব বখত জগলুল ও জেলা আ.লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নূরুল হুদা মুকুট উভয়েই এই পদের জন্য আগ্রহী। দু’জনই নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই পদটির জন্য তদবির করছেন। তবে দু’জনেরই আশা সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মতিউর রহমান তাদের নাম বলবেন। আর দু’জনের মধ্যে কার নাম বলবেন এনিয়েও বেকায়দায় আছেন মতিউর রহমান। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিন নেতার একান্ত বৈঠকে সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা মনোমালিন্য হয়েছে। কোন পক্ষই পদ ছাড়তে নারাজ। জেলা আ.লীগের সভাপতি মতিউর রহমান সিনিয়র সহ-সভাপতির বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।