বার্তা ডেক্সঃঃ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় পুত্রবধূ আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে দায়ী করেছেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। মিন্নিকে গ্রেপ্তার করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। শনিবার রাত আটটার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দুলাল শরীফ। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বড় ভাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ শরীফ এবং মেজ ভাই আব্দুস সালাম শরীফ। দুলাল শরীফ বলেন, ‘রিফাত শরীফের সাথে বিয়ের সময় কুখ্যাত সন্ত্রাসী নয়নবন্ডের সাথে মিন্নির বিয়ের ঘটনা মিন্নি ও তার পরিবার সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। রিফাতের সাথে বিয়ের পরেও মিন্নি নয়নের বাসায় যাওয়া আসাসহ নিয়মিত যোগাযোগ করতো। একই ধারাবাহিকতায় রিফাত হত্যাকান্ডের ঘটনার আগের দিন সকাল ৯টায় এবং সন্ধ্যায় মিন্নি নয়নের বাসায় যায়। মিন্নি অন্যান্য দিন রিফাতকে ছাড়াই কলেজে গেলেও ঘটনার দিন রিফাতকে সাথে নিয়ে কলেজে যায়। ঘটনার দিন রিফাত কলেজ থেকে মিন্নিকে নিয়ে চলে আসতে চাইলেও মিন্নি তার সাথে না এসে কালক্ষেপণ করতে থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী রিফাত শরীফ যখন আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় একা একা রিক্সাযোগে হাসপাতালে যাচ্ছিল তখন মিন্নি তার ব্যাগ ও স্যান্ডেল গোছানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত ছিল। এছাড়া আসামীদের একজন রাস্তা থেকে ব্যাগ তুলে মিন্নির হাতে দেয়। রিফাত শরীফকে অ্যাম্বুলেন্সে করে যখন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও মিন্নি রিফাতের সাথে যায়নি।’ দুলাল শরীফ  প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান যে, পুলিশ মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। তবে ‘এ মামলার বাদী হিসেবে মিন্নিকে এক নম্বর স্বাক্ষী তো আপনিই করেছেন’ সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে রিফাত শরীফের পিতা দুলাল শরীফ বলেন, ‘তখন আমরা জানতাম না যে নয়ন বন্ডের সাথে মিন্নির বিয়ে হয়েছিলো। জানতাম না যে নয়নবন্ডের সাথে মিন্নির সার্বক্ষনিক যোগাযোগ ছিল।’ এ বিষয়ে শারীরিক অসুস্থতার কারনে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি কথা বলতে রাজি হননি। তবে এ বিষয়ে তাঁর বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘মিন্নির সাথে নয়নের কখনই বিয়ে হয়নি। তাদের সাথে কোন যোগাযোগও ছিলো না। মিন্নির বিয়ে হয়েছে একমাত্র রিফাত শরীফের সাথেই।’
তবে তিনি বলেন, ‘অস্ত্রের মুখে মিন্নির কাছ থেকে একবার একটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিল নয়ন বন্ড।’ তখন এ বিষয়ে পুলিশকে জানিয়ে কোন ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে মিন্নির বাবা মো. মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, ‘না তখন কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’এ বিষয়ে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর আরও জানান, রিফাত শরীফকে যেদিন বরিশাল নিয়ে যাওয়া হয় সেদিন তিনি নিজে রিফাতের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে গেছেন। সেদিন রিফাতের লাশ ময়নাতদন্তের সময় রিফাতের সঙ্গে থাকা বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি তাঁর ওপর চড়াও হন। সেই বন্ধুরাই রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফকে দিয়ে এসব করাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। মোজাম্মেল আরও বলেন, ‘রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফের হৃদযন্ত্রে রিং পড়ানো আছে, তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ তাই তার কথার কোন ভিত্তি নেই। মিন্নি দোষী না অপরাধী তা পুলিশের তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn