তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খা ও সাধারণ সম্পাদক অমল করের বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। শনিবার দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আব্দুছ ছোবাহান আখঞ্জি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এখলাছুর রহমান তারা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক শাহীন রেজা, বন ও পরিবেশ সম্পাদক কামাল আখঞ্জি ও সদস্য আজিজুল হক’এর স্বাক্ষর করা এই অভিযোগ ধাণম-ির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। অভিযোগে সভাপতি ও সম্পাদক দুজনকেই তাহিরপুর উপজেলায় বিতর্কিত ও দুনীতিবাজ উল্লেখ করে লেখা হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৯ ইংরেজি পর্যন্ত পদবী ব্যবহার করে অনেক বিতর্কিত কর্মকা- করেছেন এই দুইজনেই। চাদাঁবাজি করে কোটি কোটি টাকার সম্পাত্তির মালিক হয়েছেন। গেল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবুল হোসেন খা দলের মনোনীত প্রার্থী করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল’এর বিপক্ষে এবং সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হকের পক্ষে কাজ করেছেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলাকালে হিন্দু লোককে (করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল) ভোট না দেওয়ার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের উস্কানি প্রদান করেন তিনি। বিএনপি, জামায়াত ও নাশকতার মামলার আসামীদের দলে যোগদান না করানোর জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নিষেধ থাকার পরও আবুল হোসেন খা নাশকতার মামলার আসামী তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বোরহান উদ্দিনসহ আরও অনেক বিএনপি, জামায়াত কর্মীদের দলে যোগদান করিয়ে নেত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছেন। আবুল হোসেন খা ও সাধারণ সম্পাদক অমল কর বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী শুল্ক ষ্টেশনে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছেন, এখনো করছেন। উপজেলার নতুন বাজারে আবুল হোসেন মার্কেট নামে ১৬ টি দোকান ঘরের মার্কেট নির্মাণ, তাঁর মৃত ছেলে আবুল কাশেমের নামে ৬ টি দোকান ঘরের একটি মার্কেট নির্মাণ, নতুন বাজারে আরও ৬টি দোকান ঘর, দোতলা একটি ভবন নির্মাণসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ও হাওরে কোটি কোটি টাকার সম্পদ নিজের এবং ছেলেদের নামে কিনেছেন তিনি। আয়ের সঙ্গে সম্পদের সামঞ্জস্য নেই তার। তিনি দলের বড় পদে আসীন থাকায় তার ছেলেরাও ব্যবসার নামে ব্যাপক লুটপাট ও চাঁদাবাজি করেছে। বড় ছেলে পারুল মিয়ার আনুমানিক ১০ কোটি ও ছোট ছেলে নয়ন মিয়ার নামে ৮ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক অমল কর দলের মনোনীত প্রার্থী করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল’এর বিপক্ষে এবং সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হকের পক্ষে কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী লালনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করার অভিযোগ করা হয়েছে।  তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আব্দুছ ছোবহান আখঞ্জি নয় বছর জাতীয় পার্টিতে থেকে সুবিধা নিয়েছে। বিভিন্ন দলে গিয়ে সুবিধা খেয়ে আবার আওয়ামী লীগে এসেছে। সম্মেলন, নির্বাচন আসলেই মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে দুয়ারে দুয়ারে যায় এই ‘ক্রিমিনাল’। নানা মিথ্যা অপপ্রচার করে। আমরা দুর্নীতিবাজ নই। সে (আব্দুছ ছোবহান আখঞ্জি) দুর্নীতিবাজ, তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে।’ সাধারণ সম্পাদক অমল কর মুঠোফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায় নি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি এবং বর্তমানে উপদেষ্টা আব্দুছ ছোবহান আখঞ্জি বলেন, আবুল হোসেন খা ও অমল কর’এর কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তালিকা দলীয় সভানেত্রী ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিতভাবে তুলে দিয়ে এসেছি। শনিবার ধানম-ির অফিস দপ্তরে অভিযোগ জমা দিয়ে রিসিভি কপি এনেছি। দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি। ঘুর্ণিঝড়ের জন্য তাঁরা ব্যস্ত থাকায় শনিবার দেখা করতে পারি নি। কাল আবার চেষ্টা করবো। আমি দলীয় নেতা-কর্মীদের রক্ষা করার জন্য ৩ বছর জাতীয় পার্টি করেছি। পরে আবার আব্দুস সামাদ আজাদ দলে এনে আমাকে সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি করেছেন। আমার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগ প্রমান করতে পারলে, আমি দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করবো।সূত্র দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn