শহীদনূর আহমেদ :: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ জীবদ্দশায় সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিককে হত্যা করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন- দলীয় এক সভায়  মানিকের দেওয়া এমন একটি মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার এলাকার জাউয়া গ্রামের আতাউর রহমানের বাড়িতে অনুষ্ঠিত এক কর্মী সমাবেশে মানিক এই মন্তব্য করেন।  মানিক বলেন, “সামাদ সাবের মতো নেতা, তাইন আইজ দুনিয়াত নাই। যেদিন মিটিং করছইন, করিয়া কইছইন আমারে মারাইলিবার (হত্যা করার) লাগি, ইটা রব্বানী ভাইর (জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি) বরদাসত অইছে না। একজন পুলিশ অফিসারও আছলা, এএসপি, রফিকুল ইসলাম- বেচারাও নাই, মারা গেছইন। তাইন একজন জাতীয় নেতা, কিন্তু স্থানীয় নেতার হিসাবে যে সম্মান, ইটাও আছিল না।” মানিক দাবি করেন, “নেত্রী (শেখ হাসিনা) এই বিষয়টা জানতা, আমারে যে অন্যায়ভাবে অ্যারেস্ট করা অইছে। আমারে অ্যারেস্ট করার পরের দিন নেত্রী  তাইনরে (সামাদ আজাদ) ডাকিয়া নিয়ে কইছইন, চাচা, মানিক এরেস্ট অইছে, আপনে খুব খুশি! এক কাজ করেন, আপনে তো বিয়া করছইন একটা লুকাইয়া, আমি জানি। যাইন ব্যান্ড পার্টি আনিয়া সারা রাইত ঢাকাত ব্যান্ড পার্টি বাজাইন।” প্রায় এক মিনিটের বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়।  সেটি শেয়ার করে সামাদ আজাদকে নিয়ে করা মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান অনেকে।

সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পাভেল আহমদ তার ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখেন, “মানিক পাবলিসিটির জন্য সামাদ আজাদের উপর মিথ্যাচার করছেন। আব্দুস সামাদ আজাদ যদি সত্যিই চাইতেন তাহলে মানিক আওয়ামী লীগে যোগই দিতে পারতেন না। কারণ তখন সিলেটে কে এমপি হবেন কে মন্ত্রী হবেন ইশারা করতেন সামাদ আজাদ, ফরিদ গাজী-সহ সিনিয়র নেতারা। …আপনি মন্ত্রীত্ব ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার আশায় আবুল তাবুল বকছেন। শেখ হাসিনা আর আব্দুস সামাদের তৈরি নেতাকর্মীরা যদি ঠেলা দেয় সামলাইতে পারবেন তো?” বক্তব্যের বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মানিকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে সামাদ আজাদ পুত্র ডন সামাদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তাতে সংযোগ পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের পর সুনামগঞ্জের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিবদমান দুটি পক্ষের একটির পৃষ্ঠপোষক প্রয়াত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, অপরটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অনুসারী ছিলেন এমপি মানিক।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn