সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোগুলোয় জুয়া খেলা বাংলাদেশীদের তালিকা চেয়ে সেদেশের দুর্নীতি দমনকারী সংস্থাকে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সিঙ্গাপুরের করাপ্ট প্র্যাকটিসেস ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (সিপিআইবি) পরিচালক এ চিঠি বরাবর পাঠানো হয়েছে। দুদকের মানি লন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালক এএনএম আল ফিরোজ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জ্ঞাত উপায়-বহির্ভূত আয়ের মাধ্যমে সম্পদ অর্জনকারী ও তা বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতির সঙ্গে সংগতি রেখে সর্বাত্মক অভিযান শুরু করেছে দুদক। বিভিন্ন তদন্তে উঠে এসেছে, কতিপয় অসাধু ব্যক্তি অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। গ্রেফতারকৃত সংশ্লিষ্ট অপরাধীরা স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তারা সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন ও এ অর্থ দিয়ে সেখানকার ক্যাসিনোতে জুয়া খেলেছেন। সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোগুলোয় জুয়া খেলা বাংলাদেশীদের তালিকা চেয়ে চিঠিতে আরো বলা হয়, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মেরিনা বে এবং সিঙ্গাপুরের অন্যান্য স্থানের ক্যাসিনোয় জুয়া খেলা ব্যক্তিদের পূর্ণ তালিকা প্রয়োজন দুদকের। জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোগুলোয় প্রবেশের আগে প্রত্যেক বিদেশীকে তার পাসপোর্ট জমা দিতে হয়। জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী কনভেনশনের (ইউএনসিএসি) আইন প্রয়োগে পারস্পরিক সহযোগিতা-সংক্রান্ত ৪৮ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর উভয়েই কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী দেশ হওয়ায় এর আওতায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করতে পারবে দুদক ও সিপিআইবি। দুদকের পক্ষ থেকে সিপিআইবির প্রতি গত পাঁচ বছরে সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোগুলোয় জুয়া খেলা বাংলাদেশী নাগরিকদের পাসপোর্ট নম্বর সংগ্রহে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি ও দুর্নীতি থেকে পৃথিবীকে নিরাপদ রাখার বৃহত্তর বৈশ্বিক স্বার্থে এ উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এজন্য পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। পরে আরো দুজনকে এ দলে যুক্ত করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নয়টি মামলা দায়ের করেছে দুদক। এছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে সংসদ সদস্যসহ ৩৪ জনের বিদেশযাত্রার ওপর। অভিযুক্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে এসব অভিযুক্তের মধ্যে যারা বিদেশে পালিয়ে রয়েছেন, তাদের যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করা হবে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn