ফরিদপুর:: দিরাইয়ে বাবার হাতে শিশু তুহিন খুনের ঘটনার রেশ না কাটতেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে ফরিদপুরে। এবার ফরিদপুর জেলার সদরপুরে বাবার হাতে প্রাণ গেল আরেক শিশুর। এমনই নৃশংসতার শিকার হয়েছে আড়াই বছরের শিশু রহমত। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে তাকে ঘুমের মধ্যে তুলে নিয়ে খুন করে লাশ ধানক্ষেতে ফেলে দেওয়া হয়। ছেলের পিতৃ-পরিচয় নিয়ে সন্দেহ থেকে তারই বাবা হানিফ প্রামাণিক এ খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সদরপুর উপজেলার চর চাঁদপুরের মকবুল মুন্সির ডাঙ্গি গ্রামে এ ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন ওই শিশুর মা স্বপ্না আক্তার। অভিযুক্ত হানিফ পলাতক। স্থানীয়রা জানান, হানিফ ঢাকায় লেগুনা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিন মাস ধরে তিনি বেকার অবস্থায় বাড়িতে ছিলেন। এরই মধ্যে একমাত্র ছেলের পিতৃ-পরিচয় নিয়ে হানিফের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। শিশুটির মা স্বপ্না আক্তার বলেন, রহমতকে তার নিজের সন্তান হিসেবে স্বীকার করছিলেন না হানিফ। এ নিয়ে পারিবারিক গোলযোগ চলছিল। গত শুক্রবার তিনি বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি আসেন। ছেলে নিয়ে ফের স্বামীর সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। তিনি সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে ঘুমাতে যান। রাত ৯টার দিকে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখতে পান ছেলে রহমত বিছানায় নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ির পাশে একটি ধানক্ষেতে রহমতকে মৃত অবস্থায় পায় এলাকাবাসী। পরে মণিকোঠা পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই মো. ফরহাদ হোসেন লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ৯টার পর কোনো এক সময় এ হত্যার ঘটনা ঘটে। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুরবী গোলদার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে রহমতের দাদা শুকুর প্রামাণিক অভিযোগ করেন, তার ছেলে হানিফই রহমতকে হত্যা করেছে। সদরপুর থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান, নিহতের মা স্বপ্না আক্তার সদরপুর থানায় তার স্বামী হানিফ প্রামাণিককে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হানিফকে গ্রেফতারের জন্য জোর চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, ১৪ অক্টোবর সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পাঁচ বছর বয়সী তুহিনকে গলা, কান ও পুরুষাঙ্গ কাটার পর পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে হত্যা করে বাবা আবদুল বাসির, চাচা নাসির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn