৮ বছর যাবত সৎমেয়েকে ধর্ষণ করে আসছিলেন বাবা বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪-এর শব্দ প্রকৌশলী আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮)। একপর্যায়ে মেয়েটির আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে তাঁর এক বন্ধুকেও হুমকি দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। এমন অভিযোগ করে সৎবাবার বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার রাতে রমনা মডেল থানায় মামলা করেছেন বর্তমানে ২০ বছর বয়সী ওই মেয়ে। আরমান হোসেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪-এর শব্দ প্রকৌশলী। তাঁর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে মেয়েটি উল্লেখ করেন, তাঁর বাবার সঙ্গে মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ২০০৫ সালে আরমান হোসেনকে বিয়ে করেন তাঁর মা। দ্বিতীয় বিয়ের এক বছর পর থেকে মায়ের কাছে থাকা শুরু করেন মেয়েটি। চাকরির কারণে মেয়েটির মা মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডের বাড়ি থেকে সকালে কর্মস্থলে চলে যেতেন। ২০০৮ সালের কোনো একদিন দুপুরে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েটিকে আরমান প্রথম ধর্ষণ করেন। এ সময় মেয়েটির আপত্তিকর ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন আরমান। ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আরমান বছরের পর বছর ধর্ষণ করে আসছিলেন মেয়েটিকে।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে পরে গর্ভপাত ঘটানো হয়। এরপরও তাঁর ওপর নির্যাতন চালিয়ে যান আরমান। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ওই মেয়ে তাঁর এক নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেও কুপ্রস্তাব পাঠাতে থাকেন আরমান। এতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটির এক বন্ধুকে ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠান আরমান। এ ছাড়া আরমানের বিরুদ্ধে ফেসবুকে দুটি নকল আইডি খুলে মেয়েটি তাঁর ছবিযুক্ত করার অভিযোগ আনেন।
মেয়েটির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র থেকে জানা গেছে, আরমানের এই নির্যাতনের কথা মেয়েটির মা জানতো। এমনকি সেও তাকে এমন অন্যায় কাজ করতে বাধ্য করতো। এ ঘটনা সম্পর্কে আরমান হোসেনের সঙ্গে তাঁর মোবাইলে যোগাযোগ করে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। নিউজ২৪ এর প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী কাছ থেকে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু এটি একটি পারিবারিক ঘটনা, মামলা না হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা জানতাম না। তাকে ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। তাকে আর রাখা হবে না। এই ঘটনার আগে তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি তাই আমরা জানতামও না, তবে বেশ কিছু দিন ধরে অফিসে অনিয়মিত ছিল।

(উল্লেখ্য, ছবিগুলো আরমানের ফেসবুক থেকে নেয়া হয়েছে)

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, আরমানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মেয়েটির নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে নিরাপত্তা চাইলে আমরা অবশ্যই দেব।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn