উৎপল দাস।।

দেশের সবচে আলোচিত ও সমালোচিত একটি ইস্যু নিয়ে অবশেষে লিখতে হলো। বর্তমানে ধর্ষণ যে হারে বাড়ছে তা সত্যিই আশংকাজনক। প্রথমেই আমি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে নিচ্ছি। আমি কোনো ধর্ষকের পক্ষে সাফাই গাচ্ছি না, এমনকি তাদের প্রতি কোনো ধরণের অনুকম্পাও নেই। বনানীর দুইটি আবাসিক হোটেলে ঘটে যাওয়া ‘তথাকথিত ধর্ষণ’ এর মামলা নিয়ে সমাজের নানা মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। নিজের বিবেকবোধ থেকেই কথাগুলো বলতে এসেছি।

সর্বশেষ ৩০ বছরের এক নারী বনানী-মহাখালী এলাকার হোটেল জাকারিয়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এই মর্মে বনানী থানায় গিয়ে মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, ধর্ষক তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোটেলে নিয়ে যান। সেখানে তারা টানা দুই রাত অবস্থান করার পর সেখান থেকে বেরিয়ে যে যার বাসায় চলে যান। এরপর অভিযুক্ত ধর্ষক তার কোনো খোঁজ খবর না নেয়ায় ধর্ষণের মামলা ঠুকে দিয়েছেন। কিন্তু এখানে প্রশ্ন এসে দাঁড়াচ্ছে, আপনি যখন ছেলেটার সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিলেন তথন কেন পারিবারিকভাবে বিয়ের কাজটা শেষ করলেন না? অভিযুক্ত ধর্ষক ও ধর্ষিতা ভিন্ন ধর্মালম্বী হওয়ার কারণে তারা হয়তো সামাজিক ও পারিবারিকভাবে বিয়ে করতে পারছিলেন না। কিন্তু আদালতের মাধ্যমে তো তারা বিয়ে করতে পারতেন। এটি কেন ধর্ষিতা করলেন না?

দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি খুব স্বাভাবিকভাবে এসে দাঁড়াচ্ছে তা হলো, ধর্ষিতা নারী বিয়ের প্রতিশ্রুতিতেই কেন আবাসিক হোটেলে রাত কাটাতে গেলেন? বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে ঘটনা ঘটে যাওয়ার মাস খানেক পর কেন ধর্ষিতা আদালতের মাধ্যমে মামলা করবেন থানায় গিয়ে? তাহলে কি একথা বলা যায়, প্রতিশ্রুতি ভংগ করলেই ছেলেরা ধর্ষক হয়ে যাচ্ছেন। হয়তো আপনাদের মাঝে এমন কিছু ঘটেছিল যে কারণে ছেলেটি  আপনার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। ধর্ষকদের আমরা অবশ্যই শাস্তি চাই। তবে তার আগে ধর্ষিতা কেন বিয়ের আগেই ছেলেটির সঙ্গে রাত কাটালো এবং আদালতে গিয়ে বিয়ে করলেন না এ প্রশ্নের জবাব তাকে দিতে হবে।

লেখক: গণমাধ্যমকর্মী

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn