বিশ্বজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছেন অন্তত ২০ দেশের শীর্ষ সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তারা। এর মধ্যে বেশিরভাগ দেশই যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হিসেবে পরিচিত। হোয়াটসঅ্যাপের এক তদন্তে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। তারা জানিয়েছে, পাঁচ মহাদেশে বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের সামরিক ও সরকারি কর্মকর্তারা হ্যাকের শিকার হয়েছেন। গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে রয়টার্স। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, পূর্বে যেমনটা ধারনা করা হয়েছিল তার চেয়ে অধিক সংখ্যক কর্মকর্তা হ্যাকের শিকার হয়েছেন। ২০টি দেশে প্রায় ১ হাজার ৪০০ স্মার্টফোন এই হ্যাকের শিকার হয়ে থাকতে পারে। বুধবার ইসরাইলি সংস্থা এনএসও’র বিরুদ্ধে একটি হ্যাকিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি ও বিক্রি করার অভিযোগ এনেছে হোয়াটসঅ্যাপ।বলেছে, ওই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই এই বিশাল পরিসরের হ্যাকিং চালানো হয়েছে। চলতি বছরে এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে এসব হ্যাকিং করা হয়। আপাতত ১ হাজার ৪০০ স্মার্টফোনে ম্যালওয়ার পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে, তবে মূল সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে।রয়টার্স জানিয়েছে, কে বা কারা এই সাইবার হামলা চালিয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে এনএসও জানিয়েছে, তারা মূলত সরকারি কর্মকর্তাদের কাছেই গুপ্তচরবৃত্তির সফটওয়ার বিক্রি করে থাকে। হোয়াটসঅ্যাপের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা তথ্য অনুসারে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, বাহরাইন, মেক্সিকো, পাকিস্তান ও ভারত সহ বহু মার্কিন মিত্র দেশ হামলাটির শিকার হয়েছে। তবে নির্দিষ্টভাবে কোন দেশের কোন কর্মকর্তা এই হামলার শিকার হয়েছে তা নিশ্চিত করা যায়নি।হ্যাকের খবর প্রকাশ হওয়ার পরপর বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিক দাবি করেছেন, তাদের ফোন হ্যাক করা হয়েছিল। এমন দাবি করা ব্যক্তিদের মধ্যে সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী ও দলিত সম্প্রদায়ের পক্ষে কাজ করা ব্যক্তিরা রয়েছেন।এনএসও জানিয়েছে, তারা তাদের সফটওয়ার ক্রেতার নাম প্রকাশ করতে পারবে না। যদিও পূর্বে তারা কোনো ধরনের অপরাধ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বলেছে, তাদের পণ্যগুলো কেবলমাত্র বিভিন্ন দেশের সরকারকে সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধীদের মোকাবিলায় সহায়তা করে থাকে। সাইবার নিরাপত্তা গবেষকরা অবশ্য এনএসও’র দাবির সমালোচনা করেছে। হোয়াটসঅ্যাপের সঙ্গে কাজ করা স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা সিটিজেন ল্যাব মঙ্গলবার বলেছে, হ্যাক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন ছিলেন বিভিন্ন সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn