সিলেট শহরতলীর খাদিমের চাতল গ্রামে মোবাইল চুরির অভিযোগে মারধর ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে এক কিশোর। ঘটনার পরই নির্যাতনকারীরা গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর বুধবার কিশোর রিয়াজুল হক রাজুকে দাফন করা হয়েছে।  মঙ্গলবার রাতে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগরের চাতল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাজু সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোলকপুর গ্রামের নুরে আলম টিটুর ছেলে। টিটু সিলেট নগরীর বাসিন্দা নুরল ইসলাাম নামের এক ব্যাক্তির মালিকানাধীন চাতাল গ্রামের একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। সন্তানকে হারিয়ে মা-বাবা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

টিটু জানান, তার ছেলে নগরীর মদিনা মার্কেটের তামান্না এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকানে কর্মচারি ছিল। চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান ও গিটার বাজাত। চুরির অভিযোগ ও মারধরের অপমান সইতে না পেরে সে আত্মাহত্যা করে।  স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজুকে মোবাইল চুরির অভিযোগ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মারধর ও অপমান করেন একই গ্রামের বাসিন্দা ও খাদিমনগর ইউপির ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ফয়জুল ইসলামের ছেলে রানা, একই গ্রামের তোরাব আলী ও তাজির আলী।

স্থানীয় আওয়মাী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের অফিসে নিয়ে রাত ৯ টা পর্যন্ত তাকে বসিয়ে রেখে অপমান ও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। খবর পেয়ে রাজুর পিতা ছেলে ছাড়িয়ে আনতে গিলে তাকেও অপমান করা হয় বলে তিনি জানান। বাড়ি ফিরে রাত ১০ টার দিকে আত্মহত্যা করে রাজু। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

রাজুর পিতা টিটু জানান, তিনি সিএনজি অটোরিকশা চালান। সকালে গাড়িযোগে পত্রিকা পৌঁছে দেন উপজেলাতে। তার ছেলে চুরি করতে পারে না দাবি করে বলেন, কয়েকজন লোক তার ছেলেকে মোবাইল চুরি করে এনেছে দাবি করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আটকে রাখে। মিথ্যা অভিযোগের কারণে অপমান সইতে না পেরে তার একমাত্র ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে। তিনি জানান, রাজু তার একমাত্র ছেলে। ৪ বোনোর মধ্যে সে দ্বিতীয়। ১২ বছর ধরে সিলেটে বসবাস করছেন। এর আগে দীর্ঘদিন তারা নগরীর বাগবাড়ি এলাকায় ছিলেন। সেখানে গতকাল ছেলেকে দাফন করেছেন। বিমানবন্দর থানার ওসি মো মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn