জিয়াউর রহমান লিটন-

২১ জুন, আজ থেকে ১৩ বছর আগে ২০০৪ সালের এই দিনে দিরাইয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল হাওরের এই জনপদ। এই ঘটনায় অল্পের জন্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রানে বেঁচে গেলেও, নিহত হন যুবলীগকর্মী ওয়াহিদ মিয়া ও আহত হন অর্ধশত লোক। আহত অনেকেই আজ আর বেঁচে নেই। গ্রেনেড হামলার ঘটনার ১৩ বছর পার হলেও এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা আলোর মুখ দেখেনি আজও। এমনকি নিহতের পরিবার ও আহতদের সাহায্য সহযোগীতায় এগিয়ে আসেনি আওয়ামী সরকারের কেউ। গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নিহত যুবলীগকর্মী মাতারগাঁও গ্রামের ওয়াহিদের স্ত্রী শাহানা বেগম তার  দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করছেন। স্প্লিন্টারের ক্ষত নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটছে অনেকের। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একাধিকবার আবেদন করেও কোন সারা মেলেনি বলে জানান আহতরা।

জানা গেছে- ২০০৪ সালে ২১ জুন দিরাই বাজারস্থ আখড়া পয়েন্টে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যুবলীগকর্মী ওয়াহিদ নিহত হন। আহত হয়েছিলেন প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী। তখন জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি।  গ্রেনেড হামলার সময় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি। ওইসময় প্রাণে বেঁচে গেলেও স্প্লিন্টারের ক্ষত নিয়ে দিনগুনছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ ও সিরাজ  উদ দৌলা সহ অনেকে। আহতদের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, উপজেলার সাকিতপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাকর চৌধুরী, রফিনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক ও রব মিয়া ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন গ্রেনেড হামলায় আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ বলেন, স্পিøন্টারের আঘাতে আমি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসি, স্প্রিন্টারের ক্ষতনিয়ে বেঁচে থাকলেও মাঝে মধ্যে ক্ষতস্থানে ব্যাথা অনুভব করি।

তিনি জানান- ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দিরাই থানার তৎকালীন এস এসআই হেলাল উদ্দিন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন, এরপর মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল আদালত সিলেটে জখমীদের সাক্ষ গ্রহণ করে। এসময় আমিসহ ৫- ৬ জন জখমীদের সাক্ষী নেয়া হয়। তদন্ত অসম্পূর্ণ হওয়ায় আদালত অধিকতর তদন্তে মামলাটি সিআইডিতে প্রেরণ করে, গত বছর সি আইডিতে আবারও আমিসহ ৫-৬ সাক্ষী দেই। আহতরা জানান- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিছবাহউদ্দীন সিরাজের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে আবেদন কললেও এর কোন সারা পাওয়া যায়নি। গ্রেনেড হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, নিহত যুবলীগকর্মী ওয়াহিদের পরিবার ও আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্যে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও নিহত ওয়াহিদের পরিবারের লোকজন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn