বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ১৯ জন আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই মামলার আসামিদের মধ্যে আবরারকে যেই কক্ষে খুন করা হয় সেই রুমের বাসিন্দা বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহার নাম না থাকা চলছে দেশজুড়ে বিতর্ক। এখন আবরারকে নিয়ে তার ফেসবুক চ্যাট ভাইরাল হওয়ার পর এতে নতুন মাত্রা যোগ হলো। আবার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের আগে ফাহাদের এক সহপাঠীকে অমিত সাহা ফেসবুকে জিজ্ঞেস করেন, আবরার ফাহাদ কি হলে আছে? এ ধরনের একটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের ওই শিক্ষার্থী নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে না চাওয়ায় তারই এক সিনিয়র বিষয়টি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।

এর আগে আবারার হত্যকাণ্ডের পর ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেছিলেন, আবরারকে শিবির সন্দেহে রোবাবার রাত ৮টার দিকে হলের একটি কক্ষে ডেকে এনে আমরা তার মোবাইলে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জার চেক করি। এসময় আমরা তার শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই। ফাহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বুয়েট ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা। পরে ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় চতুর্থ বর্ষের ভাইদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে আসি। পরে তাকে মারধর করা হয়ে থাকতে পারে। এরপর রাত ৩টার দিকে জানতে পারি ফাহাদ মারা গেছে। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের এই নেতার বক্তব্যে অমিত সাহার নাম থাকা শর্তেও ছাত্রলীগের তদন্তে এই ছাত্র ক্যাম্পাসের বাইরে ছিল উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করা হয়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ধারণা, অমিত সাহা যদি ঘটনাস্থলে নাও থাকেন, তিনি আবরার ফাহাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তা হত্যাকারীদের জানিয়েছেন। কারণ, ফাহাদ তো বাসায় গিয়েছিল, হলে এসেছে কি-না তা সিনিয়ররা জানতেন না। মামলায় আসামিদের মধ্যে অমিত সাহার নাম না থাকা প্রসঙ্গে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু হয়েছে এফআইআরের (প্রাথমিক তথ্য বিবরণী) রেশ ধরে। সেই বিবরণীতে উনি (বাদী) প্রাথমিকভাবে যাদের মনে করেছেন, যারা অপরাধ করেছেন, তাদের নাম উল্লেখ করেছেন। এর বাইরেও যদি কাউকে অপরাধী বলে মনে হয় এবং প্রমাণ পাওয়া যায় তবে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn