বার্তা ডেস্ক :: অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত বলেছেন, প্রিয়া সাহা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পত্র-পত্রিকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমার নাম উল্লেখপূর্বক কিছু তথ্য-উপাত্ত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি বলেন, প্রিয়া সাহা কখনও আমার সঙ্গে গবেষণাকাজে যুক্ত ছিলেন না এবং আমার নাম উল্লেখ করে দেওয়া তথ্যও মিথ্যা। সোমবার (২২ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন এই অর্থনীতিবিদ। রোববার প্রিয়া সাহা নিজের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ‘শারি’ এর ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা ৩৫ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় সংখ্যালঘুরা দেশ থেকে ‘ডিসঅ্যাপিয়ার’ হয়ে যাচ্ছে বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন তার ব্যাখ্যা দেন। বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ প্রায় ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার তথ্য কোথা থেকে পেয়েছেন জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন, অন্য তথ্য তো অবশ্যই আছে, আপনারা জানেন অধ্যাপক আবুল বারকাত এই পরিসংখ্যান বইয়ের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণা করেছেন। এবং সেই গবেষণায় উনি দেখিয়েছেন যে- বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৬৩২ জন লোক হারিয়ে যাচ্ছে। এবং কী পরিমাণে ক্রমাগত লোক হ্রাস পেয়েছে। পরিসংখ্যান বই নিয়ে ২০১১ সালে আমি স্যারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছি। যার কারণে বিষয়টা সম্পর্কে আমি অবহিত।

তবে আবুল বারকাত তার বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি (প্রিয়া সাহা) বলেছেন যে, বাংলাদেশে ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন। এর পরে ভিডিও-সাক্ষাৎকারে তিনি আমরা নাম উল্লেখ করে বলেছেন যে, উল্লেখিত পরিসংখ্যান আমার গবেষণা উদ্ভূত তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মিলে যায় (অথবা একই)। বিবৃতিতে বলা হয়, তিনি (প্রিয়া সাহা) বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিদিন ৬৩২ জন লোক হারিয়ে যাচ্ছে। ২০১১ সালে স্যারের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছিলাম যার কারণে বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত বলেন, প্রিয়া সাহার উপরোক্ত বক্তব্যসমূহের সঙ্গে আমার গবেষণালব্ধ তথ্য-উপাত্তের কোনোই মিল নেই।

তিনি জানান, আমার গবেষণায় যা আছে তা হলো- আমার হিসেবে প্রায় পাঁচ দশকে (১৯৬৪ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত) আনুমানিক ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষ নিরুদ্দিষ্ট হয়েছেন (উৎস: আবুল বারকাত, ২০১৬, বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি, পৃ:৭১)। অর্থাৎ আমি কোথাও ‘৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান নিখোঁজ রয়েছেন’- এ কথা বলিনি। উপরন্তু তিনি কোথাও বললেন না যে আমার গবেষণা তথ্যটির সময়কাল ৫০ বছর- ১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত। আবুল বারকাত আরও বলেন, প্রিয়া সাহা কখনো আমার সহ-গবেষক, গবেষণা সহযোগী অথবা গবেষণা সহকারী ছিলেন না। তিনি বলেন, ২০১১ সালে সরকারি আদমশুমারির তথ্যের ভিত্তিতে ১৯০১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোট জনসংখ্যায় বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠির আনুপাতিক হার উল্লেখ করেছি মাত্র। আবুল বারকাত বলেন, একজন সমাজ গবেষক হিসেবে আমি নিশ্চিত হতে চাই যে প্রিয়া সাহা আমার নাম উল্লেখপূর্বক যেসব বিভ্রান্তিমূলক ও নীতি গর্হিত বক্তব্য দিয়েছেন তিনি অতি দ্রুত তা প্রত্যাহার করবেন। সৌজন্যে : পূর্বপশ্চিম

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn