ঈদের পর নাশকতার পরিকল্পনা ছিল শিক্ষক বাড়ির জঙ্গিদের
রাজশাহীর তানোর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের শিক্ষক বাড়ির জঙ্গিদের ঈদের পর বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। সেই জন্য তারা দেশের বাইরে থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে এসেছিল। কারণ জঙ্গিদের কাছ থেকে পাওয়া সুসাইডাল ভেস্ট বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। এগুলো অন্যদেশ থেকে আমদানি করা হয়। রিমান্ডে নেওয়া ৮ জঙ্গি সদস্যরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এম খুরশীদ হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা নব্য জেএমবির রাজশাহী আঞ্চলিক নেতা সোহেল মাহফুজের অনুসারী। মাহফুজের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এই জঙ্গিদের বাড়িতে তার যাতায়াত ছিল। তার নির্দেশ মোতাবেক কাজ করত এই জঙ্গিরা। রোজার ঈদের পর বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। জঙ্গি মাহফুজ এখন নব্য জেএমবির রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোরের আঞ্চলিক নেতা। মে মাসে গোদাগাড়ীর জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর দায়ের করা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে।’
তানোর থানার ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই জঙ্গিবাদে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। পুলিশের প্রথম দফার অভিযানে মর্জিনার তিন মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন (৮), তাসকিরা খাতুন (৪), ছয় মাসের শিশু তানসিরা এবং হাওয়া খাতুনের তিন মাস বয়সী এক শিশুকেও উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে এই চার শিশুর মধ্যে তাসকিরা ও তামান্নাকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। অন্য দুই শিশু তাদের মায়ের সাথে রয়েছে। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। তারা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তবে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত রোববার দিনগত গভীর রাতে বগুড়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও রাজশাহী জেলা পুলিশ তানোর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বসবাসকারী শিক্ষক রমজানের বাড়ি ঘিরে অভিযান রিবার্থ পরিচালনা করে। এ সময় সেখান থেকে চার শিশুসহ ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৫ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এরপর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বাড়িটিতে দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালিয়ে তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করে। এছাড়া বাড়ি থেকে কিছু জিহাদি বই, সিডি, নগদ প্রায় দুই লাখ টাকা, একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার গ্রেফতার আট জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ৬ জনের ১০ দিন করে ও দুজনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার থেকেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।