লীনা পারভীন — শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন বাংলাদেশ নামক দেশটা আসলে কেবল নামেই “বাংলাদেশ” ছিলো কিন্তু দিলে মনে প্রাণে মগজে সব পাকিস্তানের পথে দৌড়াচ্ছিলো। প্রতিটা সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলো কোনটাই পরিকল্পনার বাইরে ছিলো না। ইঞ্চি ইঞ্চি হিসাব করে দুর্নীতি ও পাকিস্তানি নীতি ইঞ্জেক্ট করা হয়েছিলো। ৭৫ থেকে ৯৬ এবং তারপরে আবার ২০০৮ পর্যন্ত সময়টা কেবল হিসাব করেন। সেই সময়ে যা যা পরিবর্তন, পরিবর্ধন করা হয়েছিলো সেগুলোর বিষ শরীর থেকে নামাতে এত অল্প সময় যথেষ্ট নয়। কারণ আগের লম্বা সময়ের জীবাণুরা এখনও জীবিত এবং তাদের বংশবিস্তার বন্ধ নেই। সুতরাং যখন কথা বলা হয় বা সমালোচনা করা হয় তখন সবমিলিয়েই করা উচিত না হয় ইর‍্যাশনাল নয় কেবল ইলজিক্যালও বটে। প্রধানমন্ত্রীর গতকালের (৯ জুন) সংবাদ ব্রিফিং এ তিনি অনেক কথাই বলেছেন। অনেক ইস্যুতে তিনি অ্যাড্রেস করেছেন বেশ খোলামেলাভাবে। যাদের বোধ বুদ্ধি খোলা আছে তারা সহজেই ভিতরের মানুষটার সাইটিং পাওয়ারকে বুঝতে পারবেন। তারপরও কিছু মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের অর্ধেক অংশ প্রচার করে নেতিবাচক প্রচারণা করে যাচ্ছেন।

আসুন একটু ধরে-ধরে আলোচনা করি।

১. বাংলাদেশ বিমান ইস্যুতে তিনি মারাত্মক সোজাসাপটাভাবেই কিছু কথা বলেছেন এবং তাঁর সরকার বা তিনি ব্যক্তিগতভাবে যা বিশ্বাস করেন বা পালন করবেন সেগুলো প্রকাশ করেছেন। কোন কথাই লুকানো ছিলো না। তিনি অত্যন্ত খোলামেলাভাবে বলেছেন যখনই তিনি বিমানে ভ্রমণ করেন তখনই কোন না কোন সংবাদ তৈরি হয়। পাইলট বিষয়েও তিনি ইমিগ্রেশনকেই দায়ি করেছেন এবং এ বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অথচ সাংবাদিক নামধারী একজন প্রবাসী তাঁর বক্তব্যের খণ্ডিত অংশটি প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং এর পিছনে তার উদ্দেশ্য কী সেটি আমার জানা নাই। এর আগেও তিনি একই কাজ করেছেন সরকারি নানা ইস্যুতে যেখানে ব্যাখ্যা দিতে না পেরে পোস্ট ডিলিট করেছেন এবং এটা করেছেন অনেকবার। আবারও করেছেন। যারা জানতে চান তারা সংবাদপত্র পড়লেই সঠিক বক্তব্যটি পাবেন অথবা ইউটিউবেও রয়েছে। এখানে বিষয় হচ্ছে উদ্দেশ্য বা জানার আগ্রহ। অন্যকিছু নয়।

২. উস্কানিমূলক ওয়াজ বা নারীদের নিয়ে বাজে কথা প্রচারকারী ধর্মীয় মৌলবাদীদেরকে মোকাবিলায় কৌশলটাও তিনি অত্যন্ত সুন্দর করেই ব্যাখ্যা করেছেন যদিও এখানে আইনের ভূমিকার কথাটি যুক্ত থাকলে আরও পরিষ্কার হতো তবে আমি বিশ্বাস করি অবশ্যই তিনি এদেরকে প্রশ্রয় দেয়ার পক্ষপাতী নন। ধর্মীয় উগ্র মৌলবাদ ইস্যুতে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন এমনকি বোরকা, হাত মোজা, পা মোজা পরা নারীদেরকে তিনি চলন্ত ট্যান্ট বলেও আখ্যা করেছেন। আর কিছু কি দরকার আছে শেখ হাসিনাকে বুঝার জন্য?

৩. মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম বা প্রথম আলোর মতিউর রহমান গ্রুপের ষড়যন্ত্র আজকে নতুন নয়। একই ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উত্তরে যারা সন্তুষ্ট নন তাদের সন্তুষ্টি কীসে আসবে সে নিয়ে সন্দেহ করাই যায়। এমন আরও কিছু প্রয়োজনীয় ইস্যুতেই তিনি গতকাল বেশ খোলামেলাই কথা বলেছেন যদিও তিনি সবসময় খোলামেলাই কথা বলেন সবসময়। খারাপ হোক বা ভালো নিজের মতামত দিতে তিনি কখনই দ্বিধান্বিত ছিলেন এমনটা আমার চোখে আসেনি। সমালোচনা থাকবেই এবং এটা করাটা আমাদের নাগরিক দায়িত্ব কিন্তু সমালোচনা না করে উস্কানিমূলক বা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য প্রচার যারা করে তারা কি আদৌ বাংলাদেশের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি হোক সেটা চান? সন্দেহ আছে এখানে যথেষ্ট। আমাকে আপনারা খুব সহজেই আওয়ামী দালাল বলতেই পারেন তবে একথা আমি আগেও বলেছি এখনও বলি যে শেখ মুজিবের পরে আমার নেতা একজনই আছেন তিনি শেখ হাসিনা যার বিকল্প এখনও তৈরি হয়নি। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করিনা, কিন্তু শেখ হাসিনার রাজনীতিকে আমি আমার বাংলাদেশের জন্য সহায়ক মনে করি অফকোর্স সমালোচনা ব্যতীত কোন ভালোবাসাই ভালোবাসা নয়। জয় বাংলা!

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn