বার্তা ডেক্সঃঃ আরেকটি স্বপ্ন পুরন হতে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের বাসিন্দাদের। প্রায় সাড়ে ১৩ কি. মি. দৈর্ঘ্যের এই দৃষ্টিনন্দন সড়ক প্রকল্পটি হাওরের ভেতর দিয়ে সুনামগঞ্জ থেকে নেত্রকোনা পর্যন্ত যাবে। প্রকল্পটিতে খরচ হবে তিনি হাজার কোটি টাকা।  সম্ভাব্য মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এই প্রকল্পে প্রায় ১০৭ কি.মি. দৃষ্টিনন্দন সড়ক হবে। আরও প্রায় ২৮ কি. সড়ক ডুবন্ত নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে আরো কয়েক কি.মি ডুবন্ত সড়ক, ইউনিয়ন ও উপজেলা সড়ক থাকবে। উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ও ইউনিয়ন সড়কে আরো ৬৮৫ মিটার সেতু এবং ৭৭৫ মিটার কালভার্টও নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের সবকিছুই হবে দৃষ্টিনন্দন ও চোখ ধাঁধানো হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পটি এ মাসেই একনেকে অনুমোদন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কারণ হাওরের প্রকৃতি বিবেচনা করেই বিরল উড়াল সড়ক নির্মাণের কাজ প্রধানমন্ত্রীর মাথা থেকেই এসেছে।

জানা যায়, উড়াল সড়কের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই অঞ্চল পুরোপুরি ব্যবসা ও পর্যটনের জন্য খুলে যাবে। সহজেই পর্যটকরা সুনামগঞ্জে প্রবেশ করে হাওরের উড়াল সড়ক দিয়ে নেত্রকোনা হয়ে ঢাকা চলে যেতে পারবেন। এই কাজ শেষ হলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা হোটেল-মোটেল নির্মাণ, হাওরে ঘুরার জন্য নৌকা-স্পিডবোটসহ নানা কিছু করবে। সরকারিভাবে উড়াল সড়কের দুই পাশে কিছু দূর দূর কিছু ‘ইয়ূথ হোস্টেল’ করা হবে। টিনসেডের বাংলো টাইপের হোস্টেল। সেখান থেকে দেখা যাবে হাওরের মনোরম দৃশ্য। সেই সাথে হোস্টেলগুলোতে পানি ও রান্নাবান্নার ব্যবস্থা থাকবে। ‘হাওর এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প নিয়ে এখন কাজ চলছে। এই প্রকল্পে প্রাথমিক প্রাক্কলন ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকও সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের বিভিন্ন দিক যাছাই-বাছাই করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী একান্ত চিন্তা-ভাবনা থেকে হাওরে উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।  যার কারণে উড়াল সড়কটির নাম হবে ‘শেখ হাসিনা উড়াল সড়ক’। তবে তার কানে নামকরণের বিষয়টি এখনো জানানো হয়নি। একনেকে অনুমোদনের পরে নামকরণের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পাওয়ার পর নাম করণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। দিরাই থেকে শাল্লা, আজমিরিগঞ্জ-বানিয়াচং-হবিগঞ্জহ হয়ে হাওরের বুক চিরে একটি মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্প একনেকে পাশ হওয়ার পর কাজও শুরু হয়ে গেছে। মোহনগঞ্জ-নেত্রকোণার সঙ্গে একটি এবং দিরাই-হবিগঞ্জের সঙ্গে আরেকটি মহাসড়ক হলে হাওরের যোগাযোগ চিত্র পাল্টে যাবে।

প্রকল্প সূত্রে আরও জানা যায়, ১৯০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে উপজেলা অল সিজন সড়ক ১০৬ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার, উপজেলা সাবমারজিবল সড়ক ২৮ দশমিক ২১ কিলোমিটার, ইউনিয়ন অল সিজন সড়ক ১৯ দশমিক ২০ কিলোমিটার, ইউনিয়ন সাবমারজিবল সড়ক ১৪ দশমিক ৬৯ কিলোমিটার, গ্রাম সাবমারজিবল সড়ক ৮ দশমিক ১৭ কিলোমিটার এবং উপজেলা এলিভেটেড (উড়াল) সড়ক ১৩ দশমিক ৪১ কিলোমিটার। পাশাপাশি উপজেলা সড়কে ২ হাজার ৯৮৭ মিটার ব্রিজ, ইউনিয়ন সড়কে ৬৮৫ মিটার ব্রিজ, উপজেলা সড়কে ৬৬৭ মিটার কালভার্ট, ইউনিয়ন সড়কে ৭৫ মিটার কালভার্ট এবং গ্রাম সড়কে ৩৩ মিটার কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ খান বলেন, সুনামগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের মতো নয়। হাওরের কারণে এই জেলার অধিকাংশ উপজেলা বিচ্ছিন্ন। এসব উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এলিভেটেড  এক্সপ্রেসওয়েসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।  

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn