সিলেট ডেস্ক :: দেশে চলমান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহা হত্যায় অভিযুক্ত টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপের পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ব্যারিস্টার রুমিন বলেন, এই যে টেকনাফে কুখ্যাত ওসি প্রদীপ ২০১৯ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম পাওয়ার ক্ষেত্রে যে ৬ টি কথা উল্লেখ করা হয় তার প্রত্যেকটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের পুরস্কারস্বরূপ কোনো পুলিশ অফিসার যদি সর্বোচ্চ পুলিশ পদক পান, তাহলে সেটি তো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে সেটাই স্বাভাবিক। শুধু যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তাই নয়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে অর্থ লেনদেন বিষয় জড়িত আছে। দেখা যায় সাধারণ পরিবার থেকে মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়া হয় অর্থ দাবি করা হয় এবং অর্থ না পেলে ক্রসফায়ারে ভয় দেখানো হয়। অথচ আমরা শুনেছি আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ গুম বলে কোন শব্দ নাই। একই লাইন ধরে পুলিশের আইজি কিছুদিন আগে বলেছেন ক্রসফায়ার নামেও বলে কিছু নাই। এটি এনজিওগুলোর শব্দ।

তিনি বলেন, যে রাষ্ট্রে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বিভিন্নভাবে উৎসাহিত করা হয়। সেখানে ইঙ্গিত করে যে সেখানে বিচার বিভাগ ধ্বংস হয়েছে। সেখানে আইনের শাসন ধ্বংস হয়েছে। সেখানে মানুষ বিচারের প্রতি আস্থা হারিয়েছে এবং সেই রাষ্ট্র অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা এসব কথা বলেন। বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা সংবিধানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আইন ব্যতীত কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার কারও নেই। সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন অনুযায়ী সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এই সরকার ২০১৩ একটি আইন করেছিল হেফাজতে নির্যাতন মৃত্যু নিবারণ আইন। দুর্ভাগ্যবশত ওই আইনটি করা হলেও চমৎকার সব ধারা থাকা সত্ত্বেও এই আইনে কিন্তু খুব বেশি মামলা হয়নি। গুটি কয়েক মামলা হয়েছে। সেই মামলাগুলো এখন কি অবস্থায় আছে, কতটুকু অগ্রগতি আছে, সেই ব্যাপারে কিন্তু আমরা বেশি কিছু জানি না। তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সবারই দৃষ্টি কেড়েছে। অথচ প্রতিদিনই একটির বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। আমি যদি পরিসংখ্যান দিয়ে বলি ২০১৮ সালে ৪৬৬ জন ২০১৯ সালে ৩৮৮ জন আর ২০২০ সালে করোনাকালে প্রথম ছয় মাসে ১৫৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। আমরা যদি পাটিগণিতের হিসাব অনুযায়ী বলি তাহলে প্রতিদিন একজনের বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, এই যে বারবার বলা হচ্ছে এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এগুলোর একটিও কিন্তু বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কারণ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত এক যুগে অর্থাৎ ১২ বছরে ৩ হাজারের বেশি মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। সৌজন্যে : যুগান্তর

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn