গাজীপুর: প্রতিবেশী চাচার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সূত্র ধরে তিন সন্তানসহ উধাও হয়ে গেছেন গাজীপুরের কাপাসিয়ার সৌদিপ্রবাসী মহসিন শিকদারের স্ত্রী আমেনা খাতুন ডলি (৩৫)। প্রায় এক মাস ধরে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে যান মহসিন। কিন্তু ঘটনার নায়ক চাচা ফখরুল শিকদার প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযোগ নিচ্ছে না পুলিশ। অবশেষে স্ত্রী-সন্তানদের ফেরত পেতে সহযোগিতা চেয়ে গত শুক্রবার (৯ জুন) গাজীপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মহসিন শিকদার (৪২)। কাপাসিয়ার লাহুরী গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মহসিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আট বছর আগে ডলিকে বিয়ে করেন তিনি। বিদেশ থেকে এক বছর পর পর দেশে আসতেন। সংসারে তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ৭-৮ মাস আগে জানতে পারেন তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিবেশী চাচা ফখরুল শিকদারের (৪৫) পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি অশ্লীল ভিডিও এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

মহসিন শিকদার আরো বলেন, গেল ৩ জানুয়ারি দেশে ফিরে ভিডিওটি দেখে ঘটনা সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। এদিনে ওই রাতেই প্রতিবেশী ওই চাচা তার বাড়িতে হামলা চালান। এসময় মোবাইল ফোন, আড়াইশ রিয়েল ও একটি টর্চলাইট নিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার আগে এসব বিষয়ে মুখ না খুলতে হুমকি দিয়ে যান। মহসিনের অভিযোগ, কিছুদিন আগে স্ত্রী ডলি বাবার বাড়ি সুনামগঞ্জ যাওয়ার কথা বলে সন্তানদের নিয়ে চলে যান। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ডলি বাবার বাড়ি না গিয়ে ফখরুলের সঙ্গে পাশের সোনারুয়া গ্রামের সজীব বেপারীর বাড়িতে গিয়ে উঠেছে। তিনি সেখানে গেলে তারা অন্যত্র পালিয়ে যায়। তারপর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

এর মধ্যে একবার তার বড় ভাই জাহিদুল শিকদারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন ফখরুল। ওই টাকা দিলে নাকি তার স্ত্রী-সন্তানদের ফিরিয়ে দেবেন। ঘটনার পর তিনি কাপাসিয়া থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। মহসিন আরো বলেন, ‘দুই দিন আগে ফখরুলের বড় ভাই সানাউল্লাহ শিকদার আমাদের বাড়িতে এসে আমার বৃদ্ধ মাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। এ সময় হুমকি দিয়ে বলেন, ওই ঘটনার পর তার ভাইয়ের (ফখরুল) স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এখন আমার স্ত্রীকে এনে নাকি তার ভাইকে বিয়ে করাবেন।’ মহসিন আরো জানান, ফখরুল মাদক ব্যবসায়ী এবং নেশাখোর। তার বড় ভাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি। বোন মাসুদা শিকদার গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ। প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। পরে তিনি র‌্যাব-১-এর অধিনায়কের কাছে অভিযোগ করেন। বর্তমানে স্ত্রী, মেয়ে ইশরা (৬), ইলমা (৪) ও একমাত্র ছেলে রুস্তম (২) কোথায় আছে, তিনি জানেন না। স্ত্রী-সন্তানদের উদ্ধারে তিনি প্রশাসনের সহযেগিতা কামনা করেন। একই সঙ্গে তিনি ফখরুলের যথাযথ বিচার দাবি করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn