চ্যালেঞ্জের মুখে এমপি পীর মিসবাহ
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর উত্তর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে এতদিন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির বর্তমান সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ একক প্রার্থী থাকলেও একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মেজর(অবঃ) ইকবাল হোসেন চৌধুরীর পুত্র ইনান ইসমাম হোসেন চৌধুরী বিনা চ্যালেঞ্জে পীর মিসবাহকে ছাড় দিচ্ছেন না। জাপা’র মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণ-সংযোগ শুরু করেছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী প্রয়াত মেজর অব. ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও প্রয়াত মমতাজ ইকবালে’র ছেলে ইনান ইসমাম হোসেন চৌধুরী। এই অবস্থায় মনে হচ্ছে এই আসনে মনোনয়নকেন্দ্রীক প্রতিযোগিতা শুরু হবে বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা জাপা’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ ও ইনান ইসমাম হোসেন চৌধুরী’র মধ্যে। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ১৯৭৯ সালে বিএনপি’র মনোনয়নে, ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে এবং ১৯৮৮ সালে জাপার মনোনয়ন নিয়ে এমপি হয়ে তিনি ৩ বার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন প্রয়াত ইকবাল হোসেন চৌধুরী। সর্বশেষ তিনি খাদ্য মন্ত্রী’র দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে (২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে) স্ত্রী বেগম মমতাজ ইকবাল এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনের ৩ মাস ১৯ দিন পর বেগম মমতাজ ইকবাল মারা যান। পরে উপ-নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ ইংরেজির ৫ জানুয়ারি এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন। পরে জাপা’র প্রার্থী অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ এই আসনে মহাজোটের মনোনয়ন পান এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জেলা জাপার আহ্বায়কও মনোনীত করা হয় তাঁকে। গত প্রায় ৪ বছর সুনামগঞ্জ-৪ আসনে সংসদ সদস্যের পাশাপশি দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্। শুক্রবার বাবা-মা’র কবর জিয়ারত করে এবং দোয়া ও মিলাদ মাহ্ফিলের মাধ্যমে গণসংযোগে নেমেছেন ইনান ইসমাম হোসেন চৌধুরী। শুরুতেই নিজের মহল্লা আরপিন নগরের ঘরে ঘরে গিয়ে সকলের দোয়া চেয়েছেন তিনি। ইনান ইসমাম হোসেন চৌধুরী বললেন,‘নির্বাচনের বয়স না হওয়ায় এবং পড়াশুনা শেষ না হওয়ায় বিগত নির্বাচনগুলোয় মনোনয়ন চাইনি। আমি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছি। জাপার চেয়ারম্যান হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁর দোয়া নিয়ে এসেছি। আমি এখন স্থায়ীভাবে সুনামগঞ্জেই থাকবো, গণসংযোগ করবো। সকলের সহযোগিতা এবং দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করবো। আমি আমার বাবা-মা’র অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে চাই।’ সংসদ সদস্য ও জেলা জাপা’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্ দেশের বাইরে থাকায় এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায়নি। জেলা জাপা’র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী খুশনুর বলেন,‘দুই জনেই দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। দল যাকে মনোনয়ন দেবে আমরা তাঁর সঙ্গেই আছি।’ জেলা জাপা’র যুগ্ম আহ্বায়ক রশিদ আহমদ বলেন,‘জেলা জাপা’র বর্তমান আহ্বায়ক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্’র নেতৃত্বে এই আসনে দীর্ঘদিন স্থবির থাকা জাতীয় পার্টি চাঙ্গা ও সংগঠিত হয়েছে। এখন দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তাঁর সঙ্গেই থাকবো।’
সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা জাপার সাবেক সভাপতি অ্যাড আব্দুল মজিদ বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ ও ৫ এই দুই আসনে আমিও মনোনয়ন চাইবো। মেজর ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও বেগম মমতাজ ইকবালের ছেলে’র অবশ্যই সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দাবি রয়েছে। এখন যেই মনোনয়ন পায়, সেই নির্বাচন করবে। আমরাও তাঁর সঙ্গেই থাকবো। ্সূত্রঃ সহযোগী দৈনিকের অনলাইন থেকে।