ছাতক সিমেন্ট কারখানা’র নিজস্ব ঘাট অবৈধ ভাড়া দিয়ে ফায়দা লুটছে একটি চক্র
ছাতকের শিববাড়ী সিএনজি ষ্ট্যান্ড সংলগ্ন ছাতক সিমেন্ট কারখানার নিজস্ব ঘাট দিয়ে অবৈধভাবে মালামাল লোড-আনলোড করে ও ডাম্পিং সাইড হিসেবে ভাড়া দিয়ে হাজার-হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। কারখানার নিয়োগকৃত সিকিউরিটি কে ম্যানেজ করে তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এ চক্রটি কারখানার ঘাটকে তাদের ব্যবসার কাজে ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, কারখানার মালামাল ও সিমেন্ট সহজে ডেলিভারী দেয়ার জন্য শহরের শিববাড়ী সংলগ্ন সুরমা নদীর তীরবর্তী ঘাটসহ একটি গোদাম রয়েছে কারখানার। কারখানার উৎপাদিত সিমেন্ট প্রয়োজন মতো নিজস্ব নৌ-পরিবহনে নদী পার করে এ গোদামে রাখা হয়। এ ছাড়া কারখানার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ যাবতীয় মালামাল সহজে কারখানায় আনা নেয়ার জন্য গোদাম সংলগ্ন সুরমা নদীর তীরের নিজস্ব ঘাটটি ব্যবহার হয়ে আসছে।
ঘাট ও গোদামের তদারকি করার জন্য কারখানার পোষাকধারী একজন সিকিউরিটিও নিয়োগ দেয়া হয় এখানে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ এ ঘাটে কারখানা কর্তৃক নিয়োগকৃত সিকিউরিটি সাইফুল ইসলামকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে অনিয়ম ও দুর্নীতি শুরু হয়েছে। কারখানার ঘাটকে নিজের অবৈধ অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্র হিসেবে বেচে নিয়েছে সে। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর পাথর, বালু, ইট লোডিং-আনলোর্ডি করা হচ্ছে। ঘাট ব্যবহারের জন্য সিকিউরিটি সাইফুল ইসলামকে পরিবহন অনুসারে চাঁদা দিতে হচ্ছে। কারখানার ঘাট ও ভুমি সে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষের অগোচরে উপার্জন করে যাচ্ছে অবৈধ অর্থ। তার এ অবৈধ উপার্জনকে স্থায়ী করতে স্থানীয় একটি চক্রের সাথে সে হাত মিলিয়ে কার্যক্রম নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিমেন্ট কারখানার এ ঘাটে দু’টি পাথর বোঝাই ষ্টীলের নৌকা রয়েছে।
নৌকার পাথর তীরে থাকা ট্রাকে লোড করছে শ্রমিকরা। পাথর ট্রাকে লোডিং কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা জানান, স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর পাথর তারা ট্রাকে লোড করে দিচ্ছে। ঘাটের সিকিউরিটি সাইফুল ইসলাম ঘাট ব্যবহার করার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ চাঁদা নিয়ে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি ট্রাক লোড-আনলোডে সাইফুল ইসলাম ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে ১০-১৫ টি ট্রাক লোড-আনলোড করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘাট সংলগ্ন কারখানার ভুমি খন্ডকালীন সময়ের জন্য ডাম্পিং সাইড হিসেবে ভাড়া দেয়া হচ্ছে এ সিকিউরিটির মাধ্যমে। পোষাক পড়ে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সিকিউরিটি সাইফুল ইসলাম কারখানার দেয়া এ পোষাক তিনি ব্যবহার করেন না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি পোষাক পরিধান করার প্রয়োজন মনে করেন না। ঘাট পাবলিক কাজে ব্যবহার করার কথা তিনি অস্বীকার করলেও এ সময় ঘাটে লোডিংয়ের বিষয়টি দেখিয়ে দেয় হয়। এতে তিনি বিব্রতবোধ করে জানান, কে বা কারা ঘাটে পাথর লোডিং করছে তিনি জানেন না। এ ব্যাপারে ছাতক সিমেন্ট কারখানার এম ডি(ভারপ্রাপ্ত) নেপাল কৃষ্ণ হাওলাদার জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। কারখানার ঘাট ও ভুমি কারখানার কাজে ব্যবহার ছাড়া পাবলিক ব্যবসার কাজে ব্যবহার করার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।