মো.শাহজাহান মিয়া–

জগন্নাথপুরে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ছোট একটি সংঘর্ষের ঘটনায় সাংবাদিক সহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় সাংবাদিক ও কলেজ ছাত্র সহ ২১ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতিপক্ষের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে পুরো গ্রাম প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। জানাগেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের দাস নোয়াগাঁও (নয়া চিলাউড়া) গ্রামে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে গ্রামের ময়না মিয়া ও নানু মিয়ার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় শালিসি ব্যক্তি সাংবাদিক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া সহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। এ ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নানু মিয়া পক্ষের আবদুল হক বাদী হয়ে শালিসি ব্যক্তি জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ও দৈনিক দিনকাল/ সিলেট বাণী জগন্নাথপুর প্রতিনিধি সাংবাদিক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া এবং ময়না মিয়া পক্ষের জগন্নাথপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সজল মিয়া সহ ২১ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-০৫, তারিখ-০৭/০৯/২০১৭ ইং। উক্ত মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এদিকে-উক্ত মামলা হওয়ায় গ্রেফতার আতঙ্কে পুলিশের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে আসামি পরিবারের লোকজন। এতে প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে গ্রাম। খবর পেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সরজমিনে দেখা যায় জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের পশ্চিম পারে অবস্থিত দাস নোয়াগাঁও (নয়া চিলাউড়া) গ্রামটি উপজেলার একটি অবহেলিত গ্রাম। এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ হত দরিদ্র। পুরো গ্রামে রয়েছে একটি মাত্র দালাল বাড়ি। গ্রামের প্রায় সকল লোক দিন মজুর। নলুয়ার হাওরে মাছ ধরে তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
এ সময় সুলেমান আলী, ছায়াদ মিয়া, সিরাজ মিয়া, আলাই মিয়া, উক্ত মামলার স্বাক্ষী বারুদ মিয়া, রোকিয়া বেগম, হাসিনারা বেগম সহ গ্রামের শালিসি ও নিরপেক্ষ পুরুষ-নারী ও শিশুরা বলেন, ময়না মিয়ার পক্ষের এক কিশোরী তাদের আত্মীয় বাড়ি দিরাই উপজেলার রায় বাঙ্গালী গ্রামে গেলে তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করে নানু মিয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বিষয়টি বাড়িতে ফিরে কিশোরী তার মাকে জানায়। এ নিয়ে কিশোরীর মা সেলিনা বেগম ও নানু মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে গত ৫ সেপ্টম্বর মঙ্গলবার রাতে নানু মিয়া পক্ষের লোকজন সেলিনা বেগমের বাড়িতে এসে হাকডাক করলেও কোন সংঘর্ষ হয়নি। তবে পরদিন ৬ সেপ্টম্বর বুধবার বিকেলে মোবাইলে গান বাজানো নিয়ে আবারো নানু মিয়া পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিয়ে হাকডাক করলে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং শালিসি ব্যক্তি সাংবাদিক সহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হন। তারা আরো বলেন, গ্রামের সব মানুষ গরীব হলেও নানু মিয়ার আত্মীয় উপজেলার শ্রীরামসি গ্রামের এক লন্ডনি রয়েছেন। সেই লন্ডনির দেয়া টাকার জোরে তারা এসব করছে। এছাড়া নানু মিয়া পক্ষের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারা জানান, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে আসামিেেদর বাড়িতে। অথচ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে বাদীর বাড়ি। বাদী ও আসামিদের বাড়ির দুরত্ব প্রায় ১৫/২০ মিনিটের রাস্তা। এতেও রয়েছে পানি। গ্রামের হাটি বাড়ি থেকে অদুরে হাওরে নতুন বাড়ি নানু মিয়ার লোকজনের। তারা অভিযোগ করে বলেন, নানু মিয়ার লোকজন ময়না মিয়ার বাড়িতে এসে তাদেরকে মারপিট করে উল্টো লন্ডনি টাকার জোরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বর্তমানে পুলিশের ভয়ে গ্রামের পুরুষ লোকেরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়া সরজমিনে নানু মিয়া পক্ষের পান্না বেগম বলেন, আসামিদের বাড়িতে সংঘর্ষ চলা কালীন সময়ে নৌকা না পেয়ে আমি সাঁতার কেটে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার বাবা ও ভাইকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করি। এ সময় পান্নাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে রুবেল মিয়া পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ময়না মিয়ার লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে মারপিট করে বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করেছি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn