আরো ৭৩টি হাইস্কুল জাতীয়করণের জন্য চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয়করণে অর্থ ছাড়ের সম্মতির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠালে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না জানতে চেয়েছে। এরপর মন্ত্রণালয় তিন কর্মদিবসের মধ্যে তথ্য জানতে চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে। চিঠির জবাব সন্তোষজনক হলেই জাতীয়করণে অর্থ ছাড়ের ছাড়পত্র মিলবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে ১১৬টি মাধ্যমিক স্কুল জাতীয়করণে সম্মতি প্রদান করেন। জাতীয়করণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। মাউশিকে সরজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়। মাউশির কর্মকর্তারা সরজমিন স্কুলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত তথ্যসহ প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) রুহি রহমান বলেন, জাতীয়কারণ চূড়ান্ত হওয়ার পর মামলা সংক্রান্ত নানা ঝামেলা সামনে আসে। এবার আগাম ঝামেলা এড়াতে আগেই থেকেই এসব স্কুলে মামলা সংত্রুান্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এবার ৭৩টি স্কুলের বিষয়ে মাউশি থেকে তথ্য পেলেই ফের অর্থ মন্ত্রণালয়ে অর্থ ছাড়ের জন্য পাঠানো হবে। সম্মতি মিললেই জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই জাতীয়করণের সরকারি নির্দেশনা (জিও) জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয়করণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত সম্মতির জন্য কয়েকটি প্যাকেজে স্কুলগুলোর নাম পাঠানো হবে। প্রথম দফায় দুটি স্কুলের নাম পাঠানো হলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরভদ্রাসন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করণে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি মিলেনি।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর এলিয়াছ হোসেন বলেন, ৭৩টি হাইস্কুলের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের মামলা কিংবা অভিযোগ আছে কি না আমাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা তথ্য প্রেরণ করেছি। এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি মিটিং করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফের পাঠাবে।

জাতীয়করণের জন্য নির্বাচিত স্কুলগুলো হলো- নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, করিমগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কটিয়াদী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, তাড়াইল পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, পাকুন্দিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলার রায়পুর মার্সেন্টস একাডেমী, ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার নবীনগর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, আশুগঞ্জের হাজী আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয়, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউট, মকসুদপুর উপজেলার সাবের মিয়া-জসিমুদ্দিন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বানিয়াজান সিটি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর টি আমিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, খালিয়াজুড়ির শালদীর্ঘ গোপাল গোপীনাথ উচ্চ বিদ্যালয়, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শৈলকুপা উচ্চ বিদ্যালয়, সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনমাগঞ্জ উপজেলার পাগলা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিশ্বম্ভরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ত্রিশাল উপজেলার ত্রিশাল নজরুল একাডেমী, ঢাকা জেলার সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, কেরানীগঞ্জের শাক্তা উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গজারিয়া পাইলট মডেল হাইস্কুল, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাদারীপুরের রাজৈর গোপালগঞ্জ কেজেএস পাইলট মডেল ইনিস্টিটিউসন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সুতি ভিএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ভুঞাপুর উপজেলার ভুঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ঘাটাইল উপজেলার ঘাটাইল গণপাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মধুপুর উপজেলার মধুপুর রাণী ভবানী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামসুন্দর অগ্রগামী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,  কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার থানা সদর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বালাগঞ্জ উপজেলার ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কাসিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পাংশা  জর্জ পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, রতনদিয়া রজনীকান্ত মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বগুড়ার কাহালু মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা পাইলট হাইস্কুল, আলমডাঙ্গা বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার খোকসা জানিপুর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার কলারোয়া জিকেএমএক পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনার রূপসা উপজেলার কাজদিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাঘেরহাটের চিতমারী এসএম মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার পাথরঘাটা কেএম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেতাগী উপজেলার বেতাগী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, আমতলী উপজেলার একে মডেল পাইলট হাইস্কুল,  নড়াইলের লোহাগড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার নবীনচন্দ্র মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ভোলার লালমোহন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মেহেরপুরের গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরিশালের বানারীপাড়া মডেল ইউনিয়ন ইনিস্টিটিউট, পাবনার সুজানগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বনওয়ারীনগর সিবি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,  রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা উচ্চ বিদ্যালয়,  নাটোরের বড়াইগ্রামের বেগম রোকেয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,  গুরদাসপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নলডাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁর বদলগাছী পাইলট হাইস্কুল, আত্রাই উপজেলার আহসান উল্লাহ মেমোরিয়াল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর সুবিদখালী রহমান ইসহাক পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝালকাঠীর কাঁঠালিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার থানাহাট এইউ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলবাড়ী উপজেলার জছি মিঞা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,  রৌমারী উপজেলার সিজি জামান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভূরঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, রাজিবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কাজী আজাহার আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ এবিসি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নবীগঞ্জ উপজেলার জেকে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, লাখাই উপজেলার রামৈ উচ্চ বিদ্যালয়।

প্রসঙ্গত, যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি স্কুল-কলেজ নেই সেসব উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৯টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn