‘জাতীয় পুরস্কার পেলে নিজের চেষ্টাকে সার্থক মনে হয়’
বাংলাদেশ ও কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। দক্ষ অভিনয় গুণে দর্শকের ভালবাসা নিয়ে দুই বাংলার শোবিজ অঙ্গনেই তৈরি করেছেন নিজের শক্ত অবস্থান। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। এর মধ্যে দুই বার বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। আবারও তার ঝুলিতে যোগ হলো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের সেরা অভিনেত্রীর সম্মান। ‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ২০১৫ সালের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এই অর্জনে তার অনুভূতি ও বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন আমাদের সঙ্গে। লিখেছেন নিপু বড়ুয়া
অভিনন্দন, তৃতীয়বারের মত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জনের জন্য
জয়া আহসান: অনেক ধন্যবাদ।
কেমন লাগছে খবরটি শোনার পর?
জয়া আহসান: পুরস্কার পেতে সবারই ভালো লাগে। আমারও ভালো লাগছে। তবে ভাল লাগাটা একটু বেশি কারণ, এই নিয়ে তিন বার আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেতে যাচ্ছি। আমি কৃতজ্ঞ, অভিভূত। তবে আমার এই অর্জনের সবটুকু কৃতিত্ব আমার ছবির নির্মাতাদের। পরিচালক অনিমেষ আইচ, প্রযোজক এবং আমার সহশিল্পী মাহফুজ আহমেদকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ‘জিরো ডিগ্রি’ ইউনিটের সবার প্রতি ভালোবাসা। ধন্যবাদ দিতে চাই আমার দর্শকদের। আমি আপনাদের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে যাব আজীবন, আমার কাজের মাধ্যমে। আশা করি, বরাবরের মতোই পাশে থাকবেন। তাছাড়া অভিনয়ের জন্য জাতীয় পর্যায়ের পুরস্কার পেলে নিজের চেষ্টাকে সার্থক মনে হয়।
শুনেছি ‘বাহুবলী’ মুক্তিতে আপনার ‘বিসর্জন’ সিনেমায় দারুণ প্রভাব ফেলেছে?
জয়া আহসান: ‘বিসর্জন’ শুধু কলকাতায় মুক্তি পেয়েছে, অন্যদিকে ‘বাহুবলী’ সারা ভারতের প্রেক্ষাগৃহ দখল করে নিয়েছে। ‘বাহুবলী’ বড় বাজেটের সিনেমা। এরপরও শুনেছি, কলকাতায় এখনো ৩৫টি প্রেক্ষাগৃহে আমাদের সিনেমা চলছে। সবকিছুর পরও অনেক সফল ‘বিসর্জন’। চারদিক থেকে অনেক প্রশংসা পেয়েছি। শুধু রাষ্ট্রীয় পুরস্কার নয়, দর্শক ভালোবেসেছে, পছন্দ করেছে। কলকাতার নন্দনে ১ হাজার ২৫০ জন দর্শক ধারণক্ষমতার সেই মিলনায়তনে গত ১৪ এপ্রিল থেকে এই ছবিটি এখনো ‘হাউজফুল’। আমি তো নিজে উপস্থিত থেকে দেখেছি।সবকিছুর জন্য পরিচালক কৌশিক দা, পশ্চিমবঙ্গের দর্শক, আমার ফ্যাটারনিটির কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। আমি শিক্ষানবিশ থাকতে চাই। সব সময় কাজ করে যাব।
‘ভালবাসার শহর’ ছবিটি কখন মুক্তি পাচ্ছে ?
জয়া আহসান: খুব শিগগিরই ছবিটি মুক্তি পাবে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। এটি আমার অসম্ভব প্রিয় একজন নির্মাতার সিনেমা। এই সিনেমা আমাকে ও আমার অভিনয়জীবনকে সমৃদ্ধ করেছে। এই গল্প নির্দিষ্ট কোনো শহরের নয়, এই গল্প প্রতিটি শহরের। এই সিনেমায় ‘আদিল’ ও ‘অন্নপূর্ণা’ নামের দুটি চরিত্রের জীবনসংগ্রাম ও নির্মম পরিণতি দেখানো হয়েছে। অন্নপূর্ণা চরিত্রে অভিনয় করেছি আমি।
শুনলাম কলকাতায় নতুন ছবির কাজ শুরু করেছেন?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, অর্ণব পালের পরিচালনায় ‘বৃষ্টি তোমাকে দিলাম’ নামের নতুন একটি ছবির কাজ করার জন্যই শুক্রবার (১৯ মে) কলকাতা এলাম। রোববার আবার দেশে ফিরছি।
এটা ছাড়া কলকাতার অন্য কোনো ছবিতে কাজ করছেন?
জয়া আহসান: কিছু দিন আগে আরেকটি ছবির কাজ করেছি। ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরীর পরিচালনায় ছবিটির নাম ‘ভালবাসার শহর’। আগামী জুন মাসের ৬ তারিখে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার প্রযোজনায় প্রথম ছবি ‘দেবী’। সেটার কি খবর?
জয়া আহসান: সরাসরি আমার প্রযোজনায় বললে কথাটা ভুল হবে। এই ছবিতে সরকারের অনুদান রয়েছে। আমিও সেখানে কিছুটা বিনিয়োগ করছি মাত্র। ছবির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলতেই হয়, সরকারি অনুদানের ছবি নিয়ে নানা বিতর্ক আর সমালোচনা শোনা যায়। আমরা সেটা ভুল প্রমাণ করে নির্ধারিত সময়ের আগেই ছবির কাজ শেষ করে মন্ত্রণালয়ে প্রথম রাশ কপি জমা দিয়েছি। পোস্ট প্রডাকশনের কাজ শেষ করে আশা করছি শিগগিরই মুক্তির তারিখ জানাতে পারব।
হঠাৎ প্রযোজনায় আসার কারণ কি?
জয়া আহসান: এক্ষেত্রে বলবো ছবিটির গল্পই মূল কারণ। বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটা উপন্যাস অবলম্বনে ছবি নির্মিত হচ্ছে। এই উপন্যাসের ভক্তের অভাব নেই। তাই এমন একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করিনি।
অনেক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেওয়ার জন্য।
জয়া আহসান: আপনাকে এবং পূর্বপশ্চিমকেও ধন্যবাদ।