শাহনেওয়াজ বাবলু-মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান। এমনিতে দেশে তেমন রাজনৈতিক তৎপরতা না থাকলেও গত ক’মাসে নানা কারণেই আলোচনায় তিনি। আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, নৈশভোজ-সব কিছুতেই তৈরি করছেন কৌতূহল। তার গন্তব্য কোথায় সে প্রশ্নও সামনে এসেছে সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে বড় আকারে একটি নৈশভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন তিনি। কূটনীতিক, সুশীল সমাজ, রাজনীতিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে দাওয়াতও দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ওপরের চাপে তার এ নৈশভোজ বাতিল করা হয়।

বৃহস্পতিবার নিজেই সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান সৈয়দ ইবরাহিম। সংবাদ সম্মেলনে তার আরেকটি বক্তব্য নিয়েও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তিনি বলেন, বিএনপি’র সিনিয়র নেতাদের এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে তাদের আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে সৈয়দ ইবারাহিমের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাওয়া এবং বিএনপি’র বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। নৈশভোজে আমন্ত্রণ পাওয়া কয়েকজন নেতা জানান, তারা আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু দলের পক্ষ থেকে নৈশভোজে যাওয়ার বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ ছিল না। তবে আমন্ত্রণ পাওয়া একজন নেতা জানিয়েছেন, দলের হাইকমান্ড থেকে এই প্রোগ্রামে যেতে নিষেধ করা হয়েছে বলে তিনি আরেক নেতার কাছ থেকে জানতে পারেন।

জানা যায়, প্রায় এক মাসেরও বেশি আগে এই নৈশভোজের আয়োজন করার পরিকল্পনা করেন সৈয়দ ইবরাহিম। তখন তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানান। যদিও বর্তমানে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব। নৈশভোজে আমন্ত্রণ পাওয়া বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মানবজমিনকে বলেন, উনি (সৈয়দ ইবরাহিম) যেহেতু ২০ দলের একজন শরিক তাই আমরাও উনার যেকোনো প্রোগ্রামে যাই উনিও আসেন। নৈশভোজের প্রোগ্রামের আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। ওই প্রোগ্রাম যে হবে না সেটা সেদিন সকালেই জানতে পারি। আমাদের এই প্রোগ্রামে যাওয়ার বিষয়ে কোনো বিধি-নিষেধ করা হয়নি দলের পক্ষ থেকে। এর আগে ১৪ই ডিসেম্বর পল্টনের জিরো পয়েন্টে যে বিক্ষোভ হয়েছিল সেটাতে যেতে আমাদের নিষেধ করা হয়েছিল।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওই প্রোগাম কারা আয়োজন করতে চেয়েছিলেন বা কারা আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। একই মন্তব্য করেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

এর আগে গত ১৬ই জানুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এক দোয়া মাহফিল আয়োজন করেন সৈয়দ ইবরাহিম। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, সাবেক আমলা, শিক্ষক, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ প্রায় তিন শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এর আগে গত ৪ঠা ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। ওই সভা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা ছিল। গত ১৪ই ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ওইদিন দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টন ও জিরো পয়েন্ট এলাকায় সরকার পতনের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। এ নিয়েও নানা আলোচনা চলে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn