অন্যান্য সময়ের তুলনায় সুনামগঞ্জের ১৪ সাংগঠনিক ইউনিটে আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি গঠন নিয়ে উদ্বেগে আছেন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিভিন্ন সময়ে কমিটিতে নেতৃত্বে আসতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নানাভাবে সুবিধা দিয়ে থাকেন নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা। তবে এবার আওয়ামী লীগে চলমান শুদ্ধি অভিযানের কারণে এ বিষয়ে খুবই সতর্ক জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। তাছাড়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বিতর্কিত, অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করেও জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। অভিযোগ আছে, অতীতে তৃণমূলে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিতে যারা আসতেন তাদের বিষয়ে জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাব থাকতো। এতে পদবীর জন্য আর্থিক লেনদেনও হতো। লেনদেনের মাধ্যমে বিতর্কিতরা পদ নিয়ে নানা অপকর্ম করে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতো। এবার দলীয় সভানেত্রী আওয়ামী লীগে শুদ্ধি অভিযান শুরু করায় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতারা সতর্ক হয়ে গেছেন। নিজেরাও আক্রান্ত হতে পারেন এই আশঙ্কায় তারাও অতীতের লেনদেন থেকে সরে এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করতে চান। জানা গেছে, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজ, বিতর্কিত যারা দলে বলয় তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন ও ‘পদ বাণিজ্যে’র সঙ্গে জড়িত এমন নেতাদের কোনো স্তরের কমিটিতে স্থান না দিতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসংক্রান্ত চিঠি প্রতিটি জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকেও পাঠানো হয়েছে।
জানাগেছে, কিছুদিন আগে তৃণমূলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব পর্যায়ের কাউন্সিল শেষ করে তা তালিকা আকারে কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কমিটি থেকেও বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এটি চলমান শুদ্ধি অভিযানের অংশ বলে দলটির নীতিনির্ধারণী সূত্র থেকে বলা হয়েছে। এদিকে শুদ্ধি অভিযানের কারণে তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ ও ত্যাগীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বেড়েছে। অতীতে নেতৃত্বের জন্য আর্থিক সুবিধা দিতে না পেরে অনেক নেতারা বাদ পড়েছেন সেই নেতারাও আশাবাদী এখন। তারাও চাচ্ছেন শুদ্ধি অভিযানের উত্তাপে নির্বিঘেœ সম্মেলন সম্পন্ন হয়ে সঠিক নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। এদিকে তৃণমূলে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা করেছেন স্থানীয়ভাবে যেসব ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী নেতৃত্বে আসতে চান তারা। তারাও জেলা কমিটির কাছে বিতর্কিতদের নাম ও তথ্য দিয়ে তাদেরকে সুযোগ না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ডের সভাপতি ওবায়দুর রহমান কুবাদ বলেন, আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার শুদ্ধি অভিযানে আনন্দিত। আমরা চাই চলমান সম্মেলনে সঠিক, যোগ্য, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা নেতৃত্বে আসবেন। ত্যাগীরা দলে মূল্যায়ন পেলে দুঃসময়ে দলকে বুক দিয়ে আগলে রাখবে তারা। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুসারে ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের অনুরোধ জানান তিনি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান বলেন, আমরাও সতর্ক আছি। তৃণমূলের কমিটিগুলোতে যাতে কোন বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীরা না আসতে পারে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তৃণমূলের প্রতিটি সম্মেলনই স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পন্ন করে সঠিক নেতৃত্ব নিয়ে আসা হবে।সূত্র দৈনিক সুনামকন্ঠ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn