বার্তা ডেস্ক:: ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিতর্কিত ফোনালাপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে তার অভিশংসনে উদ্যোগী হয়েছে সে দেশের বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। কেবল বিরোধী দলই নয়, সে দেশের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পের অভিশংসন চান বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স। রয়টার্স ও ইপসোস পরিচালিত এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিশংসন চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫ শতাংশ মানুষ। আর ট্রাম্পের অভিশংসন দাবি করা মার্কিনীদের সংখ্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে। সোমবার প্রকাশিত ওই জরিপে বলা হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে যে পরিমাণ মানুষ ট্রাম্পের অভিশংসন চাইতেন এখন এ সংখ্যা তার চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিতর্কিত ফোনালাপের ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই ফোনালাপ নিয়ে বিতর্ক উঠার পর ২৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালানো জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বলেছেন, তারা মনে করেন ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত। মাত্র আগের সপ্তাহে গৃহীত এক জনমত জরিপে এ হার ছিল ৩৭ শতাংশ। অন্যদিকে, ট্রাম্পকে অভিশংসন করা উচিত হবে না মনে করছে ৪১ শতাংশ মার্কিনী। আর এ বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ১৫ শতাংশ মানুষ।ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থকদের মধ্যে ৭৪ শতাংশ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের অভিংশসন হওয়া উচিত। এ হার গত সপ্তাহের চেয়ে আট শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, রিপাবলিকানদের মধ্যে ১৩ শতাংশ তার ইমপিচমেন্ট চেয়েছেন। এ হার আগের সপ্তাহের চেয়ে তিন শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অনলাইনে এ জরিপ চালায় জরিপকারী সংস্থা রয়টার্স/ইপসোস। তারা যুক্তরাষ্ট্রের দুই হাজার ২৩৪ জন নাগরিকের মধ্যে এই জরিপ চালায়। এদের মধ্যে ৯৪৪ জন ডেমোক্র্যাট সমর্থক এবং বাকি ৮৫৫ জন ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের সমর্থক।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বিতর্কিত ফোনালাপের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর অভিশংসনের মুখে পড়তে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আগেই এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। ওই ফোনালাপ থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে পুনরায় জিততে টেলিফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাহায্য চেয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অভিযোগ উঠার পর তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলসি। তদন্তে দোষী সাব্যস্থ হলে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসনের মুখে পড়বেন ট্রাম্প। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বলছে, বিতর্কিত ওই ফোনালাপ ফাঁসের নেপথ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র এক কর্মকর্তা। তিনি একসময় হোয়াইট হাউসেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ফোনালাপ বিতর্ক তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই তথ্য ফাঁসকারীকে সিআইএ কর্মকর্তা হিসেবে প্রথমে শনাক্ত করে নিউইয়র্ক টাইমস। পরে রয়টার্স আলাদাভাবে সেটা নিশ্চিত হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn