‘বাংলাদেশীসহ সকল মুসলমান এবং অভিবাসী সমাজ ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অ-আমেরিকান পদক্ষেপসমূহ রুখে দেয়া সহজ হবে।একইসাথে আমেরিকার চেতনা ও মূল্যবোধকেও যথাযথভাবে জাগ্রত রাখা সম্ভব হবে’-এমন অভিমত পোষণ করেন মার্কিন কংগ্রেসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির প্রভাবশালী সদস্য এবং অভিবাসীদের নির্ভরযোগ্য প্রতিনিধি কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’ত আমেরিকানদের সমন্বয়ে গঠিত ‘মুসলিম ফর প্রগ্রেস’ তথা এমএফপির উদ্যোগে ১৯ জুন সোমবার অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিলে ডেমক্র্যাটিক পার্টির এই কংগ্রেসওম্যান আরো বলেন, ‘ট্রাম্পের অপশাসনে হতাশ হলে চলবে না। সামনের বছরের নভেম্বরে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে সময় ব্যালট যুদ্ধে রিপাবলিকানদের ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা এখন থেকেই নিতে হবে। গণতান্ত্রিক সমাজে এটি হচ্ছে অগণতান্ত্রিক আচরণ ধরাশায়ী করার প্রধান অস্ত্র।’
কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের সদস্যা ও নিউইয়র্কের বাংলাদেশী-চায়নিজ অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৬ এর নির্বাচিত কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং উল্লেখ করেন, ‘দু’সপ্তাহ আগে জর্জিয়া গিয়েছিলাম বিশেষ একটি নির্বাচনে। সে সময় ৭৫ বছর বয়েসী একজন ডেমক্র্যাটের সাথে সাক্ষাত ঘটে। তিনি সারাজীবনই ডেমক্র্যাটিক পার্টি করেন। সব সময় ভোটও দেন দলীয় প্রার্থীকে। সেই ভদ্র মহিলা আমাকে অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে বলেছেন যে, এর আগে কখনোই ডেমক্র্যাটিক পার্টির কোন প্রার্থী কিংবা তাদের নির্বাচনী কমিটির কেউ তার বাসায় যাননি ভোট চাইতে।’
গ্রেস মেং উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’তরা বিভিন্ন পেশায় ভালো করছেন। সেই পেশাজীবীরা আজ একত্রিত হয়েছেন। এটি সকলের জন্যেই আনন্দের সংবাদ। উদ্যমী এই তরুণ-তরুণীরা অভিবাসী সমাজের লোকজনকে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে অপরিসীম ভ’মিকা রাখবে বলে আশা করছি। আর এভাবেই সামনের দিনে অভিবাসী তথা মুসলিম-আমেরিকানদের হতাশাও কেটে যাবে।’
গতকাল রোববার ওয়াশিংটন ডিসি সংলগ্ন ভার্জিনিয়ায় একটি মসজিদ থেকে বের হবার পরই দুর্বৃত্ত কর্তৃক ১৭ বছর বয়েসী নাবরা হোসেইনকে অপহরনের পর হত্যার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে চায়নিজ বংশোদ্ভ’ত কংগ্রেসওম্যান মেং বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতির কবর রচনা করতে চাই দুর্বার ঐক্য।’
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী বংশোদ্ভ’ত তাহসিন চৌধুরী বলেন, ‘সামনের বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে আমি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য সিনেটে ১৩তম ডিস্ট্রিক্ট থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মাঠে নেমেছি। এই আসনের পর্টোরিকান সিনেটর হোযে প্যারাল্টাকে হটিয়ে আমি ডেমক্র্যাট সিনেটর হতে চাই। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দরকার বাংলাদেশীসহ সকল অভিবাসীর ঐক্য। কারণ, এ নির্বাচনী এলাকায় ভোটারের সিংহভাগ হলেন মুসলমান এবং অভিবাসী। দক্ষিণ এশিয়ানের সংখ্যাও অনেক।’
১৭ বছর বয়েসী তাহসিন পড়ছেন একাদ্বশ গ্রেডে। এ অবস্থায়ই তার নির্বাচনে অবতীর্ণ হবার ঘোষনা সকলকে আশান্বিত করেছে। তাহসিন ইতিমধ্যেই তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে মাঠেও নেমেছেন। সামনের বছর তার বয়স হবে ১৮, তাই প্রার্থী হতে কোন সমস্যা থাকবে না। তাহসিনকে ঘিরেই যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণের পর উচ্চ শিক্ষা শেষে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত বাংলাদেশী-আমেরিকানরা জোট গড়েছেন ‘মুসলিম ফর প্রগ্রেস’ নামে। এ অনুষ্ঠানে তারা উল্লেখ করেন, ‘তাহসিনকে শুরু। এরপর আমরা সিটি কাউন্সিল, সিটি মেয়র এবং কংগ্রেসে ধাবিত হবো। বৃটিশ পার্লামেন্টে ৩ বাংলাদেশী যেভাবে বিজয় মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছেন, আমরাও সে পথেই হাঁটছি। এ অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও ছিলেন সরব।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn