প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামেপর আরো একটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ঠেকিয়ে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত। এর ফলে ট্রামেপর পরিকল্পিত অভিবাসননীতির বাস্তবায়ন পিছিয়ে গেল। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অভিবাসননীতি বদলে নতুন নীতি বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করে চলছেন। সেপ্টেম্বর মাসে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ট্রামপ অনির্দিষ্টকালের জন্য ইরান, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া, চাদ, ভেনেজুয়েলা এবং উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে এক নির্বাহী আদেশ দেন। এ খবর প্রকাশ করেছে আলজাজিরা। খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ডিসট্রিক্ট কোর্টের বিচারপতি ডেরিক ওয়াটসন মঙ্গলবার ট্রামেপর অভিবাসননীতির অধিকাংশের বাস্তবায়নের অনুমোদন দেননি।ট্রামেপর অভিবাসননীতি বাস্তবায়নের একেবারে শেষ মুহূর্তে নির্বাহী আদেশ কার্যকর হওয়ার কিছুক্ষণ আগে এর বাস্তবায়ন স্থগিত করে দেন আদালত। যাতে থেমে গেছে পুরো প্রক্রিয়াই। অবশ্য ভেনেজুয়েলা এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কোনো আপত্তি করেননি আদালত। ট্রামেপর অভিবাসননীতি বাতিলের কারণ হিসেবে বিচারপতি ওয়াটসন তার রায়ে বলেন, এই নির্বাহী আদেশ জাতীয়তার ওপর ভিত্তি করে বৈষম্যসূচক আচরণ করে। আদালতের কাছে এমন আচরণ বিভেদমূলক যা যুক্তরাষ্ট্র যে নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত তার বিরোধিতা করে।  উল্লেখ্য, ওয়াটসন এর আগেও ট্রামেপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা- সমপর্কিত নির্বাহী আদেশের বাস্তবায়ন বাতিল করে দেন। সেসব বাস্তবায়ন বাতিল করতেও একই কারণ উল্লেখ করেন তিনি।

এদিকে, হোয়াইট হাউস বিচারপতির এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে লড়বেন। বলা হয়, গভীর পর্যবেক্ষণের পরেই তারা এই নীতির আইনানুগ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিপন্থি নয়। ডিসট্রিক্ট কোর্টের ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির ফলে তারা বারবার বৃহত্তর জনস্বার্থ রক্ষার্থে ট্রামেপর এ নীতির বিরোধিতা করে আসছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই এ নীতির বাস্তবায়ন খুব জরুরি। এ নীতি বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণেচ্ছুক অন্যদেশের নাগরিকদের কিছু সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান মেনে চলতে বাধ্য হবে। সামপ্রতিককালে অভিবাসন সংক্রান্ত ক্যামেপইনিংয়ের মধ্য দিয়ে ট্রামপ প্রধানত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ  দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর তিনটি নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব দেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত প্রতিটি প্রস্তাবেরই বিরোধিতা করেছে। অবশ্য এ প্রস্তাবের একটি পুরনো সংস্করণ গৃহীত হয়েছিল সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে। এটিকে সে সময় ট্রামপ প্রশাসনের একটি প্রাথমিক বিজয় বলে ভাবা হয়েছিল। অস্থায়ী ঐ প্রস্তাব অবশ্য পরে বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে স্থায়ীভাবে বাস্তবায়নের অনুমোদন দেননি আদালত।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn