জিয়াউর রহমান লিটন-

দিরাইয়ে কথিত এনজিও কর্মী আবদুস সোবহান উরফে বিচ্ছু চাকুরীর লোভ দেখিয়ে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে দরিদ্র নারী পুরুষের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠছে। কথিত এনজিও কর্মী আবদুস সোবহান উরফে বিচ্ছু নিজেকে বেসরকারী সংস্থা আহসানিয়া মিশনের একাউন্ট অফিসার পরিচয় দিয়ে ওয়াশ প্রজেক্টে মাঠকর্মী পদে চাকুরী দেয়ার কথা বলে বিকাসের মাধ্যমে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

জানা গেছে, আবদুস সোবহান শুক্রবার  দিরাই থানা রোডস্থ হোটেল নাদের রিয়াজের ২০৪ নম্বর রোমে অবস্থান করে স্থানীয়  কতিপয়  দালালদের মাধ্যমে অভিনবভাবে এ প্রতারনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আবদুস সোবহান বিচ্ছু পাবনার চাটমহর নতুন বাজার কালীনগর গ্রামের মৃত সদরউদ্দিন মাস্টারের ছেলে, সে ঢাকার মিরপুর-২ রুপনগর মামার বাসায় থাকেন বলে জানান।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, দীর্ঘদিন বেসরকারি সংস্থা পপিতে কাজ করার সুবাধে দিরাইয়ের অনেকের সাথেই তার পরিচয় হয়। পরিচিত মনে করে দরিদ্র বেকার নারী ও  পুরুষরা  তার উপর বিশ্বাস করে সাক্ষাত করতে আসেন। তার কথামত চাকুরী পাওয়ার লোভে অনেকেই  একটি বিকাস নাম্বারে টাকা দিয়েছেন বলে জপানাগেছে। কোনো সার্কুলার ও কোন আবেদন ছাড়া ৫-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে চাকুরী দেয়া হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে হোটেল নাদের রিয়াজে উপস্থিত হলে  দেখা যায় হোটেলের ২০৪ নম্বর রোমে বসে আছেন আবদুস সোবহান উরফে বিচ্ছু এবং রোমের ভেতর ও বাহিরে বেশ কয়েকজন নারী পুরুষ আসা যাওয়া করছেন। এ সময় কথিত এনজিও কর্মী আবদুস সুবহান ওরফে বিচ্ছুর সাথে কথা বললে তিনি জানান, দিরাইয়ে আহসানিয়া মিশনের ওয়াশ প্রেগ্রাম নামে একটি প্রজেক্ট চালু করা হবে, অফিস ভড়ার কথা চলছে, ৯ ইউনিয়নে মাঠকর্মী  নিয়োগের কাজেই তিনি দিরাই আসছেন,জাহাঙ্গীর নামে ঢাকা অফিসে তাদের একজন বস আছেন, যার পার্সোনাল বিকাস নাম্বার ০১৮১১৩২১৬১৭ এ  উনার কাছেই টাকা দেয়া হচ্ছে। নাম্বারটি আবদুস সোবহান বিচ্চু প্রত্যেকের কাছে নিজের মোবাইল ফোন থেকে  এসএমএসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন। ওই বিকাস নাম্বারে চাকুরী প্রার্থীরা ৫ -১০ হাজার টাকা বিকাস করেছেন বলে  জানাযায়। তবে আবদুস সোবহান জোর দিয়ে বলছেন যারা বিকাস নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছেন তাদের সকলের চাকুরী হবে নিশ্চিত, আগামী সেপ্টেম্বর মাসের আমাদের ওয়াশ প্রজেক্টের কাজ চালু হবে।

কথিত আহসানিয়া মিশন নামে বেসরকারি সংস্থার কথিত একাউন্ট অফিসার  আবদুস সোবহান উরফে বিচ্ছু শাল্লা উপজেলার চাকুয়া গ্রামের  পাপড়ি রানী দাস ও অর্পিতা রানী রতœাসহ দিরাই উপজেলার গোবিন্দ পুর গ্রামের সবিতা রানী দাস, হাসিমপুর গ্রামের মন্দিরা রানী দাস, ভাঙ্গাডহর গ্রামের নিকেশ দাস এই পাঁচ জনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করলেও আরও শতাধিক দরিদ্র বেকার শিক্ষিত অর্ধশিক্ষিত নারী পুরুষের কাছ থেকে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অভিনব পন্থায় কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ।

কল্যানী গ্রামের স্নেহলতা দাস জানান- সোবহান স্যার বেসরকারি সংস্থা পপিতে চাকরী করতেন, সেই সুবাধে আমাদের কাছে পরিচিত, উনি ফোন দিয়ে আমাকে জানান ওয়াশ সংস্থা নামে আহসানিয়া মিশনের একটি প্রজেক্টে কিছু লোককে চাকুরী দেয়া হবে। ফোন পেয়ে শুক্রবার হোটেল নাদের রিয়াজের ২০৪ নং রোমে দেখা করতে আসি। দেখা করার পর চাকুরীর জন্য ১০ হাজার টাকার বিকাসে বসের কাছে পাঠাতে হবে বলে সোবহান সাব জানান। আমরা ৩জন একসাথে গেলেও আরও অনেকেই ছিলেন।  চন্দা রানী দাস জানান, ওয়াশ প্রজেক্ট চালু হবে, উনিয়ন ভিত্তিক কর্মী নিয়োগের খবর পেয়ে ওই দিন হোটেলে উনার সাথে দেখা করতে আসি, শুনেছি ১০ হাজার টাকা দুই কিস্তিতে দিতে হবে, টাকা না দিতে পারলে চাকুরী হবে না।  এদিকে আজ শনিবার হোটেল নাদের রিয়াজ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানাযায়, শুক্রবারে আবদুস সোবহান ২০৪ নং রোম ভাড়া নেন এবং ঐদিন বিকেলেই তিনি রোম ছেড়ে চলে যান। এ ব্যাপারে আহসানিয়া মিশনে কর্মরত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- আহসানিয়া মিশনে এ ধরনের প্রতারণার কোন সুযোগ নেই। দিরাইয়ে আমাদের কোন অফিস নেই। আবদুস সোবহান বিচ্ছু নামের কেউ আমাদের সংস্থায় কাজ করেন না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn