বার্তা ডেস্ক :: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ২য় বিয়েতে বাধা দেয়ায় আশিকা ইসলাম মমতা (৩০) নামে এক গৃহবধূকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী রবিউল ইসলাম রবির(৩৫) বিরুদ্ধে। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মমতা বাদী হয়ে রবিউল ইসলাম রবিকে প্রধান আসামি করে আরো দুইজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে সকালে উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। আহত ওই গৃহবধূ বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আব্বাস আলীর মেয়ে। অভিযুক্ত রবি উপজেলার টংভাঙ্গা এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে। এছাড়া সে বন্দর বাসস্টান্ডে রোজিনা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- রবির মা রশিদা বেগম (৫৫) ও রবির দ্বিতীয় স্ত্রী এবং টংভাঙ্গা এলাকার শফিকুল ইসলাম বাচ্চু মিয়ার মেয়ে রোকসানা(২২)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে মমতা ও রবি প্রেম করে বিয়ে করে। এর পর তাদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় মেয়ে সিনহা ও শিশু সন্তান আয়ান। দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে ভালোই চলছিলো মমতার সংসার। তবে এর কিছুদিন পরেই হঠাতই বাবার বাড়ি থেকে রবি ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বলে মমতাকে। একমাত্র ছোট বোন হওয়ায় তিন বড় ভাইয়েরা বোনের সুখের কথা ভেবে ৩ লক্ষ টাকা যোগাড় করে দেয় রবিকে। তবুও চাহিদা মেটে না রবির। পরে আবারো টাকার জন্য চাপ দেয় মমতাকে। না হলে অন্য কোথাও মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে করবেন বলে মমতাকে হুমকি দেয় রবি। এতেও রাজি না হলে মমতার উপর চলে নির্যাতন। এদিকে ঘটনার দিন রবি মমতাকে না জানিয়ে বিয়ে করে ২য় স্ত্রী রোকসানাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। এতে মমতা বাড়িতে প্রবেশে বাধা দেয়। বাধা দেয়ায় রবি, ২য় স্ত্রী রোকসানা ও রবির মা রশিদা বেগম মমতার উপর হামলা চালায়। এ সময় কিল ঘুষি ও বাশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় অভিযুক্তরা। পরে মমতা তার বাবার বাড়িতে ফোন করে জানালে তার ভাইয়েরা এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়।

বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট শিশু সন্তান আয়ানকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন মমতা। তার পাশেই বসে আছেন ৭ বছর বয়সী মেয়ে সিনহা। এ সময় মমতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমাকে প্রায় মারধর করে। টাকা চাইলে আমার ভাইয়েরা সেই টাকাও দেয়। আবারো টাকা চায়। কিন্ত টাকা দিতে না পারায় সে আমাকে না জানিয়ে মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে ২য় বিয়ে করে। এতে আমি বাধা দিলে আমাকে বেধড়ক পেটায়। আমি এর সঠিক বিচার চাই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম রবি ২য় বিয়ের কথা স্বীকার করে জানান, হ্যা আমি তাকে না জানিয়ে বিয়ে করছি। কিন্ত আমি তাকে কোনো মারধর করিনি। উল্টো তার ভাইরা আমাকে বাড়িতে এসে মারধর করে। আমি যদি দুটো বউ পুষতে পারি তাহলে তাদের সমস্যা কোথায়। আমি দু’জনকে নিয়েই সংসার করবো। হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম জানান, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।-পূর্বপশ্চিমবিডি

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn