গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন মাত্র ১০ মাস আগে। ফেসবুকে বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবিগুলোতে যেন এখনও প্রাণবন্ত ক্যাপ্টেন তানভীর। প্রায় প্রতিটি ছবিতেই হাতে হাত রেখে হাস্যোজ্জ্বল স্বামী-স্ত্রী। হয়তো কথা ছিল সারাজীবন একসঙ্গে পথচলার। বিয়ের দিনের স্মৃতি এখনো পুরনো হয়নি। মুছে যায়নি তানভীরের স্ত্রীর হাতের মেহেদির রঙ। কিন্তু বছর না ঘুরতেই নবপরিণীতাকে একা রেখে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার দায়িত্ব নেয় সেনাবাহিনী। দায়িত্ব পালন করতে উদ্ধার অভিযানে শামিল হয়েছিলেন তানভীর। কিন্তু ফেরা হয়নি তার। মাটিচাপায় করুণভাবে মৃত্যুবরণ করতে হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরুণ অফিসার ক্যাপ্টেন তানভীর সালাম শান্তকে।

পটুয়াখালী জেলার বাউফলের ছেলে তানভীর ২০০৯ সালে যোগদান করেন বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে। ৬৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের মাধ্যমে কমিশন লাভ করেন তিনি। পরে ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় পদোন্নতি পান। বিয়ে করেন ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তানভীর ও তার স্ত্রীর ফেসবুক ওয়ালে বিয়ের স্মরণীয় মুহূর্তের ছবি এখনও প্রাণবন্ত। তানভীরের প্রোফাইল ছবিতেও রয়েছে তার বিয়ের ছবি।

তার ফেসবুকের কাভার ফটোতে আছে পবিত্র কুরআনের সুরা হাশরের একটি আয়াতের অনুবাদ। যেখানে লেখা আছে- ‘যদি আমি এই কোরআন পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তবে তুমি দেখতে যে, পাহাড় বিনীত হয়ে আল্লাহ তা’আলার ভয়ে বিদীর্ণ হয়ে গেছে। আমি এসব দৃষ্টান্ত মানুষের জন্য বর্ণনা করি, যাতে তারা চিন্তাভাবনা করে।’ তার স্ত্রীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘টুকটুক’ নামে। সেখানেও নবদম্পতির নানা সুখস্মৃতির সব ছবি শোভা পাচ্ছে। যা হয়ত এখন থেকে প্রতিনিয়ত দগ্ধ করবে নববধূকে।

গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর হাতে বিয়ের রিং পরানোর ছবি পোস্ট করেছেন টুকটুক। গত ৭ জানুয়ারি সমুদ্রপাড়ের কোনো হোটেলের সুইমিংপুলে তোলা দুইজনের একটি ছবি পোস্ট করেছেন তিনি। ছবিটির ক্যাপশন দিয়েছেন ‘লাভ অব মাই লাইফ’। ওয়ালে রয়েছে দুইজনের হাস্যোজ্জ্বল একাধিক ছবি। প্রসঙ্গত, টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম বিভাগের তিন জেলায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর ধসে পড়া পাহাড়ের মাটি সরিয়ে হতাহতদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরু করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn