বার্তা ডেস্ক :: রাজধানীর দারুসসালাম থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম মাজহারুল আনামকে তার স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় দারুসসালাম এলাকার মাজার রোড শেলটেক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে মঙ্গলবারই রাজধানীর দারুসসালাম থানায় নারী নির্যাতন ও যৌতক আইনে মাজহার আনামসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীন (৪০)।  মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে এবিএম মাজহারুল আনামকে।  মামলা ও মামলার বাদী সূত্রে জানা গেছে, মাজহার ও মামলার বাদী ফিরোজার দীর্ঘ ১২ বছরের সংসার জীবন। তাদের ১১ বছর বয়সী মহসিনুল আনাম রাফাদ নামে এক  প্রতিবন্ধী ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তান হওয়ার পর থেকে মাজহার বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে বাদী (ফিরোজা পারভীন) তার স্বামীকে দফায় দফায় বিশ লাখ টাকাসহ দামি আসবাবপত্র প্রদান করেন।

ফিরোজা পারভীন জানান, তার স্বামী একজন লম্পট, দুঃচরিত্র ও লোভী প্রকৃতির লোক।  যৌতুকের টাকা পাওয়ার পর তিনি (মাজহার) নারীদের পেছনে আমোদ-ফুর্তিতে ব্যয় করেছেন। কয়েকজন নারীর সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ ছবিও ফাঁস হয়েছে। সব টাকা নারীদের পেছনেই ব্যয় করেন। গত বছরের ৪ এপ্রিল বিকাল বেলায় তার স্বামী মাজহার মামলার অন্য আসামিদের প্ররোচনায় তার পরিবারের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক চান। যৌতুক না দেওয়ায় আসামিরা তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে।

তিনি জানান, পরবর্তীতে আত্মীয়-স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী (ফিরোজা পারভীন) একমাত্র বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানের কথা চিন্তা করে আপোস মীমাংসার উদ্দেশে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বাসায় ফিরলে দেখতে পান ঘরের আলমারির তালা ভাঙ্গা। বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া ১৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র সব গায়েব হয়ে গেছে। এমন সময় আসামি মাজহার যৌতুকের ১০ লাখ টাকা ছাড়া কেন তিনি (বাদী) বাসায় এসেছেন এই কথা বলে তাকে (ফিরোজা পারভীন) হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জাযগায় আঘাত করেন।

ফিরোজা পারভীন আরও জানান, মামলার অপর আসামি মুন্নি (যার সঙ্গে পরকিয়ায় লিপ্ত) তাকে (বাদীকে) এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও তার প্রতিবন্ধী সন্তানকেও মারধর করেন। একপর্যায়ে তার স্বামী (মাজহার) তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বালিশ চাপা দেয়। তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা ছুটে এসে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়।

সূত্র জানায়, দারুসসালাম থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাজহার আনাম ইতোপূর্বে অস্ত্রসহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। মামলাটি চলমান রয়েছে। দারুসসালাম থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আজ (মঙ্গলবার) বিকাল ৩টায় মামলার প্রধান আসামি মাজহারুল আনামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ যুগান্তর  /জিএসি-১৬

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn