বার্তা ডেস্ক :: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রশ্নবিদ্ধ করতেই উপনির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি।  নির্বাচনে অংশগ্রহণের নামে বিএনপি তামাশার নাটক করেছে।  সোমবার শহীদ শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় নিজ সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গত এক দশকে গণতান্ত্রিক আচার-আচরণ-রীতি-নীতিতে ব্যর্থ বিএনপি একটি নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনে পরাজিত হওয়া এবং নিজেদের ব্যর্থতার দায় নির্বাচন কমিশন ও সরকারের ওপর চাপিয়ে দেয়ার তৎপরতা চালানো বিএনপির নিত্য-নৈমিত্তিক কর্মকাণ্ডে পরিণত হয়েছে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষা ও সুসংহত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার এবং আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বরাবরের মতোই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাদের কথাবার্তা ও আচার আচরণে দেশবাসী গভীরভাবে হতাশ হয়েছে। উভয় আসনে বিএনপির প্রার্থীদ্বয় বিপুল ব্যবধানে পরাজিত হওয়ায় বিএনপি নেতারা চিরাচরিত ভঙ্গিতে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। অতীতেও আমরা দেখেছি নির্বাচন এলেই বিএনপি জনগণের কাছে না গিয়ে নানা ধরনের কূটকৌশল ও অপতৎপরতা শুরু করে।
তিনি বলেন, নিজেদের রাজনৈতিক ব্যর্থতার কারণে নিশ্চিত পরাজয় জেনে তারা সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে থাকে এবং একের পর এক দোষারোপ করে ভোটারদের উৎসাহ-উদ্দীপনা নষ্টের অপচেষ্টা চালায়। নওগাঁ-৫ ও ঢাকা-৫ আসনের উপনির্বাচনেও দেশবাসী বিএনপির চিরায়ত অপরারাজনীতির এই কৌশল প্রত্যক্ষ করেছে। কারবালার প্রান্তরের চেয়েও ভয়াবহ ছিল ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, খুনিরা শেখ রাসেলকেও ছাড়েনি। রাসেল মানবিক গুণাবলীর অধিকারী ছিলেন। উদারভাবে মানুষের সঙ্গে মেলামেশার শিক্ষাটা তিনি পরিবার থেকেই পেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পরিবারের সবার সঙ্গে ছোট রাসেলকেও বন্দি জীবনযাপন করতে হয়েছে। ঠিকঠাক মতো খাবার-দাবার নেই, খেলা নেই, বইপত্র নেই। কী নিদারুণ কষ্টে যে দিন কেটেছে।  চোখের কোনে সর্বদা পানি জমে থাকলেও কোনো অভিযোগ ছিল না রাসেলের।  বরং কেউ জিজ্ঞাসা করলে রাসেল বলতো চোখে ময়লা জমেছে। এ থেকে বোঝা যায় শেখ রাসেলের মানসিক বোঝাপড়া তার শরীরিক বয়সের চাইতে অধিক বিস্তৃত ছিল। তিনি বলেন, শেখ রাসেল অত্যন্ত মেধাবী বিচক্ষণ ও তীক্ষ্ণ মস্তিস্কের অধিকারী ছিল। শৈশবেই তার মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত ছিল। বাঙালির মুক্তি আন্দোলনের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ছিল তার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে। বাঙালির এই স্বাধীনতার ইতিহাসে জড়িয়ে আছে শেখ রাসেলের নাম। স্বাধীন বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে রাসেলেরও বড় হওয়ার স্বপ্ন ছিল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৫ আগস্টের সেই বিশ্ব ইতিহাসের জঘন্যতম পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে সেদিন বিশ্ব মানবতা থমকে গিয়েছিল, সমগ্র বাংলাদেশ হয়েছিল লাঞ্ছিত, নিথর হয়ে পড়ে ছিল বুলেটবিদ্ধ শিশু শেখ রাসেলের লাশ। শেখ রাসেল আমাদের স্মৃতিতে অম্লান, অনুভূতিতে অক্ষয় আর চেতনায় চির জাগরুক। আমরা চাই শিশুদের অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের জন্য বাসযোগ্য এক পৃথিবী গড়ে উঠুক। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একে এম আফজালুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।-যুগান্তর

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn