প্রশিক্ষণ, কর্মশালা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশনসহ (পিএসআই) বিভিন্ন কারণে বিগত তিন বছরে বিদেশ সফর করেছেন বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন সংস্থা বা কোম্পানির দুই হাজার ৯৬১ কর্মকর্তা। তাদের এই সফরের সব খরচ জুগিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, মো. আবু জাহির, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছা. খালেদা খানম ও বেগম নার্গিস রহমান বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন কোম্পানিগুলোর প্রকল্পের অধীনে গত তিন বছরে যেসব কর্মকর্তা বিদেশ সফর করেছেন, তার তথ্য দেওয়া হয়। সংসদীয় কমিটি বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে এবং অপ্রয়োজনীয় সফর যাতে না হয়, কোনো অনিয়ম যাতে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে বলেছে। বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, প্রশিক্ষণে ১ হাজার ২২৬ জন, কর্মশালায় ৮ জন, সেমিনারে ২৮ জন এবং পিএসআইসহ অন্যান্য কারণে বিদেশ সফর করেছেন ১ হাজার ৭০৩ জন।

বৈঠকে জানানো হয়, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) ১৪ জন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিরো) ৫৪০ জন, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের ৭৩০ জন, পাওয়ার সেলের ৫১ জন, নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (নওপাজিকো) ৮১ জন, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিডেটের (পিজিসিবি) ৯৮৮ জন, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিডেটের (ডেসকো) ২৬৮ জন, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ৮৩ জন, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এপিএসসিএল) ১০ জন, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিডেটের (আরপিসিএল) ১২ জন, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ৯৬ জন, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিডেটের (সিপিজিসিবিএল) ২৩ জন, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইজিসিবি) ৪৫ জন এবং বি-আর পাওয়ার জেন লিমিটেডের ২০ জন কর্মকর্তা গত তিন বছরে বিদেশ সফর করেছেন।

এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, বিদেশ সফর নিয়ে প্রশ্ন আছে বলেই তাঁরা বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে এনেছিলেন। তাঁরা এ বিষয়ে কিছুটা চিন্তিত। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিদেশ সফর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে সফরগুলোর যথার্থতা নিয়ে যথাযথভাবে নিরীক্ষা করার সময় ও সুযোগ হয়নি। মন্ত্রণালয় সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাতে কমিটি অসন্তুষ্ট নয়। তবে ভবিষ্যতে আরও সজাগ থাকতে হবে। সংসদীয় কমিটিও সজাগ আছে, এ বিষয়ে কমিটি নজরদারি আরও বাড়াবে। এদিকে, সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুতের সিস্টেম লসের পরিমাণ নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া অবৈধ সংযোগ ও চুরি প্রতিরোধে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করতে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, কমিটি সিস্টেম লস নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ চুরির বিষয়টি যুক্ত না করার পরামর্শ দেয়। এ ক্ষেত্রে চুরির বিষয়টি বাদ দিয়ে প্রকৃত সিস্টেম লস দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কী পরিমাণ চুরি হয়, সেটাও আলাদা দেখাতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn