“বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। আমরা দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে প্রতিবন্ধীদের সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (সিআরপিডি)’ ও এজেন্ডা ২০৩০ এর আলোকে প্রতিবন্ধী বিষয়ক জাতীয় নীতিমালাসমূহও হালনাগাদ করেছি”-আজ জাতিসংঘ সদরদপ্তরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (সিআরপিডি) স্বাক্ষরকারী দেশসমূহের ১২তম সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্যে একথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন প্রতিবন্ধী বিষয়ক একজন বিশেষ প্রবক্তা। তিনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার শুভেচ্ছাদূত ও বাংলাদেশের অটিজম বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি। সায়মা অটিজম ও প্রতিবন্ধীতার বিষয়ে বিশেষ করে বাংলাদেশ, এতদঅঞ্চল ও এর বাইরে ব্যাপকভাবে সচেতনতামূলক প্রচারণা ও ফলপ্রসু কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন’। বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও এনজিওসহ বেসরকারি খাতসমূহ সরকারের এসকল প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার বাস্তবায়িত ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ। তিনি বলেন, আসছে জুলাই মাস থেকে সরকার প্রায় ১৪ লাখ বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গকে ভাতা প্রদান করবে, আর বর্তমানে ভাতা প্রাপ্তদের এ সংখ্যা ১০ লাখ। ক্রীড়া ও উদ্ভাবনীসহ বিভিন্ন খাতে প্রতিবন্ধী যুবদের নানা সাফল্যগাঁথা তুলে ধরেন স্থায়ী প্রতিনিধি। এ বছর আবুধাবীতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ অলিম্পিকে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ দল ২২টি স্বর্ণ জয়ের যে সাফল্য দেখিয়েছে তাও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া স্থায়ী প্রতিনিধি বাংলাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভাস্কর ভট্টাচার্যের বিশেষ উদ্ভাবনী-অবদানের কথা তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, ভাস্কর ভট্টাচার্য তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে চারটি ধরণে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রথমবারের মতো অভিধান তৈরি করেছেন এবং ইতোমধ্যে এটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি অর্জন করেছে। রাষ্ট্রদূত মাসুদ বলেন, ‘সাফল্যের এসকল উদাহরণ সকল প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়নের জন্যই অনুপ্রেরণার অনন্য উৎস হতে পারে’।রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যদিও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি তথাপিও ‘প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি’ বাস্তবায়নে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে আমাদের আরও অংশীদারিত্ব প্রয়োজন আর এক্ষেত্রে আমি উন্নয়ন সহযোগিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই’। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিআরপিডি’তে অনুস্বাক্ষরকারী দেশেসমূহের মধ্যে প্রথম সারির একটি দেশ। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের রেজ্যুলেশন ৬১/১০৬ এর মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন (সিআরপিডি) গৃহীত হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn