বার্তা ডেক্সঃঃ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘গাঙকুমারী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন তারিক আনাম খান, মোশাররফ করিম ও রোবেনা রেজা জুঁই। ছবিটির দৃশ্যধারণের কাজে তাঁরা এখন সুনামগঞ্জে অবস্থান করছেন। সাধনা আহমেদের রচনায় ছবিটি পরিচালনা করছেন ফজলুল কবীর তুহিন। ফজলুল কবীর তুহিন সুনামগঞ্জের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মরহুম অ্যাডভোকেট আব্দুর রইছ এমপির ছেলে। তাঁর ভাই ড. খায়রুল কবীর রুমেন জজ কোর্টের সাবেক পিপি ও আরেক ভাই ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘদিন প্রবাসে অবস্থান করা তুহিন একসময় নিজেও অভিনয় করতেন। নব্বইয়ের দশকে হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ‘হিমু’ চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

প্রথম দফায় সুনামগঞ্জের হাসাউড়া এলাকায় ‘গাঙকুমারী’ ছবির দৃশ্যধারণ শুরু হয়েছে বলে জানান নির্মাতা। আর দ্বিতীয় দফায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ছবির দৃশ্যধারণ করা হবে। ফজলুল কবীর তুহিন বলেন, ‘১৫ তারিখ আমরা শুটিং শুরু করেছি। সুনামগঞ্জে শুটিং চলবে আরো দুই দিন। এখনো তারিক আনাম খান ও মোশাররফ করিম শুটিংয়ে অংশ নেননি। তাঁরা ১৫ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার শুটিংয়ে অংশ নেবেন।’

ভাটি অঞ্চলের জেলেজীবন নিয়ে নির্মিতব্য এ চলচ্চিত্রে খল চরিত্রে দেখা যাবে তারিক আনাম খান ও মোশাররফ করিমকে। গুরুত্বপূর্ণ আরেক চরিত্রে কাজ করছেন রোবেনা রেজা জুঁই। চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘গাঙকুমারী’র চরিত্রে অভিনয় করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার শিক্ষার্থী তুরা। এটি তার প্রথম চলচ্চিত্র। এছাড়াও তুরাস, জিসানসহ আরও কয়েকজন তরুণ অভিনয়শিল্পী থাকছেন এ চলচ্চিত্রে। ছবিতে বেশ কয়েকটি গান থাকছে। এর মধ্যে একটি গানের দৃশ্যধারণ চলছে। সেজুল হোসেনের কথায় মকসুদ জামিল মিন্টুর সুর সংগীতে এ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, মলয় চক্রবর্তী রাজু ও তনুশ্রী। সিনেমাটোগ্রাফির দায়িত্বে আছেন সাহিল রনি।

সিনেমাটির গল্পে দেখা যাবে, বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের ১৮-১৯ বছরের এক জেলেকন্যা গাঙকুমারী। ভাটি অঞ্চলের নদী, পানি, গাছ, পাখি ও আকাশের সঙ্গে প্রকৃতির অংশ হিসেবেই বিরাজ করে, গাঢ় শ্যামলা এই মেয়েটি। বর্ষার নতুন জলের গন্ধ তার নদীর মতো গভীর কালো চোখকে মাতাল করে। জমাটবাঁধা মেঘের মতো কালোচুলের ঢল, বাংলার পোড়ামাটির টেপা পুতুলের মতো তার সুঠাম দেহের পিঠ ছাপিয়ে গেছে। নদীর বুকে নৌকা বেয়ে এবং বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে মাছ ধরে গাঙকুমারীর দিন কাটে। সারল্য ও বলিষ্ঠতার সুস্পষ্ট ছাপ তার আচরণ ও দেহভঙ্গিমায়, যা সে চেষ্টাহীনভাবেই প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়েছে। পারিবারিক সূত্রে পাওয়া পেশাগত জীবনের কারণে, নারী হিসেবে পিতৃতান্ত্রিক সমাজের কোনো দ্বিধা, ভয় বা আড়ষ্টতা ভর করেনি তার মনে। মানুষ হিসেবে আত্মরক্ষার সার্বক্ষণিক যে সংগ্রাম চলে সামাজের প্রান্তিক মানুষদের মধ্যে, তা গাঙকুমারী চরিত্রে সৌন্দর্য রূপে প্রতীয়মান হয়ে পৌঁছে গেছে পৃথিবীর সব প্রান্তিক মানুষের অনির্দেশ্য কোনো জীবন সংগ্রামে। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সহজশক্তি গাঙকুমারী চরিত্রের আরেকটি বৈশিষ্ট্য এবং এই কারণেই আবহমান বাংলার নারীর আকাঙ্ক্ষা ও সংগ্রামের প্রতিনিধিত্বও করে সে। শাপলা ফোটা নদীর বুকে বেড়ে ওঠা, অত্যন্ত স্বল্পভাষী এই মেয়েটির জীবন নানা বাঁকে বিচিত্র ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে বয়ে চলে এবং এর ভেতর দিয়ে উঠে আসে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির জলছবি।

পরিচালক জানিয়েছেন, টেলিভিশনের আরও কয়েকজন জনপ্রিয় মুখও এতে অভিনয় করবেন। এদিকে মোশাররফ করিম অভিনীত একটি নাটকের শুটিংয়ের কাজও চলছে সুনামগঞ্জে। নাটকের নাম ‘বউ যখন বিউটিফুল’। তাইফুর জাহান আশিক পরিচালিত এ নাটকে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, নিশাত প্রিয়ম, খালিদ হাসান ও নিকুল কুমার মণ্ডল।-সৌজন্যে-সুনামগঞ্জমিরর

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn