ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়েছিলেন বাংলাদেশি তারকা ফেরদৌস। এজন্য তাকে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করে এবং ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয়। এ ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘ভোটের সময় বাংলাদেশ থেকে আমাদের একজন বন্ধু এসেছিলেন। তৃণমূলের মিছিল দেখে তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। ব্যাস, অমনি তার ভিসা ক্যানসেল করে দেওয়া হল। এটা কেমন কথা? তার ভিসা বাতিলের কোনও যুক্তি নেই।’ প্রায় দুমাস পর মমতা ব্যানার্জি এ বিষয়ে কথা বললেন। সোমবার (১০ জুন) কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ভারত সফরে গিয়ে ১৪ ও ১৫ এপ্রিল রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে স্থানীয় চলচ্চিত্র শিল্পীদের সঙ্গে ভোট প্রচারে গিয়েছিলে ফেরদৌস। ওই মিছিলের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। ওই মিছিলে টালিগঞ্জের দুই তারকা অঙ্কুশ ও পায়েলকেও তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে ভোট চাইতে দেখা যাচ্ছে। এ ঘটনার পর ফেরদৌস দেশে ফিরে দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। ওই সময় বিজেপির দাবি করে, বাংলাদেশের অভিনেতা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে এসে এভাবে ভোটে প্রচার করতে পারেন না। এতে যেমন নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হয়েছে, তেমনই ভিসার শর্তও লঙ্ঘন হয়েছে।

রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কারও নাম না-নিলেও ভিসা বাতিল করার প্রসঙ্গ থেকে এটা স্পষ্ট যে তিনি ফেরদৌসের কথাই বুঝিয়েছেন। তবে ফেরদৌসের ওই বিতর্ক তৃণমূল প্রার্থীর বক্তব্যের জন্য। ওই সময় তার দাবি ছিল, ‘ফেরদৌস এসে তার হয়ে প্রচার করেছেন, এমন কোনও তথ্য তার নাকি জানাই নেই।’ তিনি বলেছিলেন, ‘দেখুন, আমি নিজের সংগঠনের জোরেই চিরকাল ভোট করি। কোনও তারকার আমার হয়ে প্রচারের কোনও দরকার নেই।’ সেই ঘটনার দুমাস পর মমতা ব্যানার্জিও একই দাবি করছেন। তিনি বলেন, ‘ফেরদৌস আদৌ তৃণমূলের প্রচারে যুক্ত ছিলেন না। শুধু সামনে দিয়ে তৃণমূলের মিছিল যাচ্ছিল দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ওরা (বিজেপি) বাংলাদেশ থেকে কাদের নিয়ে এসেছিল, এই রাজ্যে কী করিয়েছিল সেটা বরং আপনারা খোঁজ নিন।  মনে রাখবেন (বাংলাদেশ থেকে) ইনফিলট্রেশন (অনুপ্রবেশ) কিন্তু শুধু মাইনরিটিরা (মুসলিমরা) করে না, অন্যরাও করে। তাদেরকে কারা ঢোকালো সেটাও আপনারা দেখুন।’ ফেরদৌসের ভিসা বাতিলের পর তিনি পশ্চিমবঙ্গে যেসব চলচ্চিত্রর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেগুলোর শুটিংও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। মমতার এ বিবৃতির পর টালিগঞ্জ সিনেমা-মহলের অনেকেই ধারণা করছেন, ফেরদৌসের ভিসা যাতে পুনর্বহাল করা হয় সেজন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হয়তো এবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টক্কর নিতেও প্রস্তুত।  

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn