বাংলাদেশ ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে, উপমহাদেশের কন্ডিশনে বাইরের দলগুলোর জন্য, এমনকি উপমহাদেশের শ্রীলঙ্কার মতো দলের জন্যও তারা ভয়ঙ্কর একটা দল। এই ব্যাপারটা মাথায় নিয়েই আসছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। তিনি বলছিলেন, ‘গত বছর দুয়েকে বাংলাদেশ খুবই উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। বিশেষ করে হোমে খেলার ব্যাপারে। তারা গত বছর ইংল্যান্ডকে নক আউট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ অবশ্যই একটা ভয়ঙ্কর দল।’

বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি স্মিথ খুব উত্সাহ দেখিয়েছেন অ্যাস্টন অ্যাগারকে নিয়ে। স্টিভেন স্মিথের নিজের গল্পটাও প্রায় এমন ছিল। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান, মূলত স্পিনার হিসেবে শুরু করেছিলেন ক্যারিয়ার। আস্তে আস্তে হয়ে উঠেছেন সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। এখন অস্ট্রেলিয়া দলে সেই দশা কাটছে অ্যাস্টন অ্যাগারের। স্পিনার পরিচয়ে দলে আসা অ্যাগার ইতোমধ্যে ১১ নম্বরে সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসটা খেলার বিশ্বরেকর্ডও করে ফেলেছেন। তার অধিনায়ক স্মিথ মনে করেন, একদিন তাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা আছে অ্যাগারের।
বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে এখন ডারউইনে ক্যাম্প করছে অস্ট্রেলিয়া দল। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে স্মিথ বলছিলেন, এই ক্যাম্প আর বাংলাদেশে যে অনুশীলন ম্যাচটা আছে, এ দুটোই সফরের জন্য তাদের প্রধান ভরসা। বাংলাদেশকে ভালো প্রতিপক্ষ মেনে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক বলছিলেন, তারা এখানে শক্ত লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। বাংলাদেশের সফরের জন্য ঘোষিত দলে অলরাউন্ডার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া বিশেষ ভরসা রাখছে অ্যাগারের ওপর। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও কার্টরাইটের পাশে এই অলরাউন্ডারকে তুরুপের তাস মনে করতে চায় অস্ট্রেলিয়া। এমনকি এই সফরের দলে জায়গা না হওয়া স্টিভ ও’কিফির অভাবটা অ্যাগার পূরণ করতে পারবেন বলে স্মিথ মনে করেন।
অ্যাগারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্মিথ বলছিলেন, ‘আমার ধারণা ও অবশ্যই সেরা ছয়ে (ব্যাটিং লাইনআপে) ব্যাট করবে একসময়; সেটা করার সামর্থ্য রাখে।  এখনই আমি ঠিক নিশ্চিত নই। এখন তো দলে ও স্পিনার হিসেবে আছে, যে খানিকটা ব্যাট করতে পারে। সম্ভবত আমি যে অবস্থায় শুরু করেছিলাম, সে রকম অবস্থা। তবে আমি নিশ্চিত যে, ও কোনো না কোনো সময় টপ অর্ডারে উঠে আসার যোগ্যতা রাখে। সে একটা ভিন্ন ধরনের ব্যাটসম্যান। সাম্প্রতিক ভারত সফরে বা নেটে মনে হয়েছে, ও স্পিনের বিপক্ষে আসলেই বিশেষ কিছু ভালো পরিকল্পনা নিয়ে নামে। ফলে আমার মনে হচ্ছে, ও ব্যাট-বলে সমান ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।’
স্মিথদের সামনে এই সময়ে একটা বড় প্রশ্ন উঠেছে, ভারত সফরের প্রথম টেস্টে চমকে দেওয়া ও’কিফি দলে নেই কেন। ও’কিফির জন্য স্মিথের সহানুভূতি আছে। তবে তিনি মনে করেন, তার অভাবটা অ্যাগার টের পেতে দেবেন না, ‘সে (ও’কিফি) ভারত সফরে প্রথম টেস্টে খুব ভালো করেছিল। আমি তার সাথে কথা বলেছি, সে খুব হতাশ। আমি মনে করি, অ্যাগার এবার এই সুযোগটা নিতে পারবে। ও অনেকদিন ধরে দেখছে। এবার বাংলাদেশ সফরে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবে।’ বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশ সফরে স্পিনকে একটা বড় হাতিয়ার বানাতে চায় অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ মনে করেন, তাদের এই ডারউইনের ক্যাম্প ও বাংলাদেশে অনুশীলন ম্যাচ তরুণদের বাংলাদেশ সম্পর্কে দারুণ ধারণা দেবে। সে জন্যই এখন মুখিয়ে আছেন তারা, ‘এটা আমাদের কিছু তরুণ খেলোয়াড়ের জন্য সামনে এগিয়ে আসার ক্ষেত্রে দারুণ একটা সুযোগ। আমরা শেষ টেস্ট সিরিজ খেলেছি ভারতে। আর এখানে (বাংলাদেশে) কন্ডিশন প্রায় একইরকম হবে। ফলে চ্যালেঞ্জটাও প্রায় একইরকম। এই ডারউইনের ট্রেনিং ক্যাম্পটা আমাদের জন্য খুব কাজের হচ্ছে। এখানে আমরা কিছু ছেলেদের কাছ থেকে দেখে নিতে পারছি। বুঝতে পারছি, কেমন চলছে প্রস্তুতি। এরপর ওখানে আমাদের একটা ম্যাচও আছে।’
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn