কলকাতার উপকণ্ঠে বাস। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকা তাঁকে টানত। বাবার কাছে হাতেখড়ি, তার পরে স্কুলজীবনে পেইন্টিং ট্রেনিং। তবুও ছবি আঁকাকে পেশা হিসেবে নেওয়ার কথা প্রথমটায় ভাবেননি তিনি। স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করেছেন ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে আর স্কুলজীবন থেকেই চুটিয়ে খেলাধুলো করেছেন। ব্যারাকপুরের অ্যাসেম্বলি অফ অ্যাঞ্জেলস সেকেন্ডারি স্কুল-এর ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেনও ছিলেন একতা ভট্টাচার্য। তবে ক্রিকেট ছাড়াও আরও একটি স্পোর্টকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবেসেছেন ছোট থেকে— ফুটবল। আজ সেই ফুটবলের দেবতাই আজ তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

সম্প্রতি কলকাতা জুড়ে চোখে পড়ছে হোর্ডিং— মহালয়ায় শহরে আসছেন মারাদোনা। এই বিশেষ ইভেন্টের প্রচারের যাবতীয় ক্রিয়েটিভের দায়িত্বে রয়েছেন একতা। ‘আমি মূলত হাতেই এঁকেছি সব পোস্টার, তার পরে কিছুটা ডিজিটাল টাচ দিয়েছি ক্রিয়েটিভে’— একতা জানালেন, তাঁর আঁকা ক্রিয়েটিভগুলি যখন দেখানো হয় দিয়েগোকে, তিনি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত সরাসরি লেজেন্ডের সঙ্গে কথা হয়নি তাঁর। মহালয়ায় শহরে এলে তাঁর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করার অপেক্ষায় রয়েছেন একতা।

‘ছোটবেলা থেকে আমি প্রচণ্ড ফ্যান মারাদোনার। এই কাজটা যখন আসে তখনই দারুণ লেগেছিল।’ গত কয়েক বছর ধরেই প্রচ্ছদশিল্পী এবং পোস্টার ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন একতা। প্রায় দেড়শোটি নাটক ও সিনেমার পোস্টার ডিজাইন করেছেন। তাঁর গুণমুগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন অনুপম খের এবং মহেশ ভট্টও। একতাকে নিয়ে টুইটও করেছেন প্রবীণ অভিনেতা। শুধু শিল্পীই নন, ২৫ বছরের একতা এই মুহূর্তে সম্ভবত টলিউডের কনিষ্ঠতম আর্ট ডিরেক্টর।

বেশ কিছু শর্ট ফিল্মের শিল্প নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ফাইন আর্টস-কে এতটাই ভালবেসে ফেলেছেন একতা যে এমবিএ করার সুযোগ পেয়েও কলকাতা ও তাঁর এই শৈল্পিক জগৎকে ছেড়ে যেতে চাননি তিনি। স্নাতকোত্তর স্তরে জার্নালিজম ও মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন কিন্তু পাশাপাশি ডিজাইনিংয়ের কাজও চালিয়ে গিয়েছেন।

‘আমার প্রথম কাজ আসে যখন, তখন আমি কলেজে। আমার এক বন্ধু, তথাগত ঘোষের একটি শর্ট ফিল্মের পোস্টার ডিজাইন করার কাজ।’ তথাগত ঘোষের ছবির সেই পোস্টারটি থেকেই সবার নজরে পড়েন তিনি। একের পর এক কাজ আসতে থাকে, শুধুমাত্র এই শহর থেকে নয়, দেশের অন্যান্য শহর থেকেও। তাই আজ আর মিডিয়া পার্সন হিসেবে নয়, আর্ট ডিরেক্টর অথবা শিল্পী হিসেবেই পরিচিত হন তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn