মনির হায়দার-বিতর্কে কুপোকাত হলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রায় সবগুলো জনমত জরিপে টানা পিছিয়ে থাকার পটভূমিতে এবার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের কাছে বিতর্কেও হারলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। সিএনএন টেলিভিশনের তাৎক্ষণিক জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, দর্শকদের ১শতাংশের মতে বিতর্কে জিতেছেন বাইডেন। অন্যদিকে ২৮ শতাংশ মনে করেন, ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন এই বিতর্কে। যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার অধিকাংশ গণমাধ্যমের বর্ণনায় এটি ছিল অত্যন্ত বিশৃঙ্খল ও ‘কাজিয়া’ ধরনের একটি বিতর্ক। ব্যক্তিগত আক্রমণ, একজনের কথার মধ্যে আরেকজনের বাধা সৃষ্টি, প্রসঙ্গের বাইরে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া এবং শেষমেশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কর্তৃক ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য’ ধারণার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়টিই ছিল এই বিতর্কের লক্ষণীয় দিক। এ ছাড়া কথা বলতে গিয়ে বারবার ট্রাম্পের বাধার মুখে পড়ে কিছুটা ক্ষুব্ধ জো বাইডেনের হঠাৎ বলে ওঠা, ‘উইল ইউ শাট-আপ, ম্যান’ কথাটিও বিশেষ আলোচনার খোরাক জোগাচ্ছে। এটি ছিল আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক।
আগামী ৩রা নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে তারা এমন আরো দু’টি বিতর্কে মুখোমুখি হবেন। এ ছাড়া দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে একটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে ৭ই অক্টোবর। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে প্রথম বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।
 ওহাইয়ো অঙ্গরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড শহরে অবস্থিত কেইস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটির স্যামসন প্যাভিলিয়নে এই বিতর্ক অনুষ্ঠানে সাকুল্যে ৭০ জন দর্শক সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। তবে টেলিভিশন ও অনলাইনে বিতর্কটি দেখেছেন কোটি কোটি মানুষ। সিএনএন টেলিভিশনে এটি সরাসরি দেখানো হয়। অন্যদিকে, বিতর্কটি সঞ্চালনা করেছেন ফক্স নিউজের সিনিয়র সাংবাদিক ক্রিস ওয়ালেস। ৯০ মিনিটের বিতর্কটিকে মোট ৬টি সেগমেন্টে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো সাফল্য-ব্যর্থতা, সুপ্রিম কোর্টে নতুন বিচারক নিয়োগ, করোনাভাইরাস মহামারি, অর্থনীতি, বর্ণবৈষম্য ও সহিংসতা এবং আসন্ন নির্বাচন প্রক্রিয়া। প্রতিটি সেগমেন্টের জন্য সময় বরাদ্দ ছিল ১৫ মিনিট করে। এ ছাড়া প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের জন্য দুই মিনিট করে সময় দেয়া হয় দুই প্রার্থীকে। সিএনএন-এর তাৎক্ষণিক জরিপের ফলে বলা হচ্ছে বিতর্ক শুরুর আগেই ৫৬ শতাংশ মানুষ বলেছিল যে, প্রথম বিতর্কে বাইডেন জিতবেন। তবে ৪৩ শতাংশ মানুষের অভিমত ছিল যে, বিতর্কে ট্রাম্প বিজয়ী হবেন। কিন্তু বিতর্ক শেষে তাৎক্ষণিক জরিপের ফলে ব্যবধানটা আরো অনেক বেড়ে যায়। এতে ৬০ শতাংশ দর্শক রায় দেন যে, বাইডেন বিতর্কে জয়ী হয়েছেন। তবে ২৮ শতাংশ দর্শক ট্রাম্পকেই বিজয়ী ঘোষণা করেন।
বরাবরের মতোই এই বিতর্কের আয়োজন করে কমিশন অন প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট (সিপিডি)। এটি একটি নির্দলীয় ও অলাভজনক সংগঠন। তারা সরকারের কাছ থেকে কিংবা কোনো রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কোনো অনুদান গ্রহণ করে না। ১৯৮৭ সাল থেকে এই সংগঠনটিই প্রত্যেক নির্বাচনের আগে একাধিক প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটের আয়োজন করে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn