বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় দুই জনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া ১৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এর আগে নিম্ন আদালতে ৮ জনকে ফাঁসি ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয়। রোববার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত রফিকুল ইসলাম শাকিল ও রাজন তালুকদারকে দেয়া নিম্ন আদালতে ফাঁসির রায় বহাল রাখেন। নিম্ন আদালতে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, মীর মো. নূরে আলম লিমন, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওনসহ ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া সাইফুল ইসলাম, কাইয়ুম মিঞা টিপুসহ ৪ জনকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়। চলতি বছরের ১৬ মে বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিতকরণ) ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- এএইচএম কিবরিয়া, ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, আলাউদ্দিন, ওবায়দুর কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল-আমিন, রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, মোশাররফ হোসেন ও কামরুল হাসান। হাইকোর্ট মামলার তদন্তকর্মকর্তা এসআই জাহিদুল হক ও ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার মাকসুদকে দায়িত্বে অবহেলার জন্য বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

উচ্চ আদালতে আমরা বিচার পাইনি: বিশ্বজিৎ পরিবার

বিশ্বজিতের বাবা ও মা

নিম্ন আদালতের রায়ে সন্তোষ হওয়া বিশ্বজিৎ দাসের পরিবার উচ্চ আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, উচ্চ আদালতের রায়ে তারা বিচার পাননি। রোববার বিকালে হাইকোর্টে রায় ঘোষণার পর বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত চন্দ্র দাস এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নিম্ন আদালতে ৮ জনের ফাঁসিতে আমরা সন্তোষ ছিলাম। কিন্তু উচ্চ আদালতে আটজনের ফাঁসি থেকে দুইজনের ফাঁসি বহাল রাখায় আমরা আশাহত হয়েছি। উচ্চ আদালতের এ রায়ে আমরা বিচার পাইনি। বিশ্বজিতের বাবা আরও বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে আমার ছেলেকে হত্যা করা হল। এটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আমরা উচ্চ আদালতের এই রায়ে আশাহত। বিচার পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় আছি। তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে দাবি করছি- নিম্ন আদালতের রায় যেন বহাল রেখে খুনিদের শাস্তি কার্যকর করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে বিশ্বজিৎ দাসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ৫ মার্চ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ডিবি পুলিশ। একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এবিএম নিজামুল হক আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। এদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনসহ মোট ১৩ জন পলাতক রয়েছেন। চলতি বছরের ১৬ মে বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিতকরণ) ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়। রোববার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় দুই জনের ফাঁসি, ১৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn