প্রবীণ রাজনীতিক মুজিবুল হক রেলমন্ত্রী থাকাকালে বিয়ে করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। সেই পথেই হাঁটলেন বিপত্নীক বর্তমান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। মন্ত্রী বিয়ে করতে যাচ্ছেন বা বিয়ে করে ফেলেছেন- এমন খবর আগেই এসেছে গণমাধ্যমে। এবার বিয়েটা কীভাবে হলো তা জানা গেল কনে শাম্মী আক্তার মনির ভাইয়ের বরাতে। শাম্মীর বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা। তবে থাকেন রাজধানীর উত্তরায়। চাকরি করতেন ঢাকায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে। চাকরির পাশাপাশি আইন পেশায় রয়েছেন শাম্মী। হাইকোর্টে এক সিনিয়র আইনজীবীর সাথে কাজ করেন। মন্ত্রী নিজেও একজন আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে তার নামডাকও আছে বেশ। আর তার কাছ থেকে অভিজ্ঞ পরামর্শ নিতে গিয়ে দেখা দুজনের। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। দিন বিশেক আগে পরিচয় দুজনের। মন্ত্রী তার জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়েছেন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে। আর শাম্মীও বিচ্ছেদের পর থেকে একা। পরস্পরকে ভালো লেগে যায়। আর একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতে হাত রাখার।

গত ৫ জুন ঢাকার হেয়ার রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন তন্ময়ে পারিবারিকভাবেই হয় বিয়ে। কনে শাম্মী আক্তারের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘আমার বোন শাম্মী ঢাকার উত্তরায় থাকে। সে আইন বিষয় পড়াশোনা শেষ করে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছে। ‘আইনি বিষয়ে পরামর্শ নিতে ২০ দিন আগে রেলমন্ত্রীর কাছে যায় সে। আমার বোনকে মন্ত্রীর পছন্দ হয়। পারিবারিকভাবে গত ৫ জুন তাদের বিয়ে হয়।’

বিয়েতে ছিলেন মিলন নিজেও। বরপক্ষে ছিলেন বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনেপক্ষে মিলন ছাড়াও ছিলেন তার আরেক ভাই। বিয়ের মধ্যস্থতা করেছেন বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী টুটুল। তিনি বলেন, ‘আলোচনা ঢাকায় ওরা শুরু করেছে। কিন্তু আমি মেয়ের পক্ষ থেকে ঘটকের দায়িত্ব পালন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘রেলমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখন মেয়ের পক্ষ থেকে আমাকে ঘটকের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছিল। আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি।’

শাম্মীর বাবার বাড়ি বিরামপুর উপজেলা নতুন বাজার এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে শাম্মী আক্তার মেজো। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) লাইনম্যান পদে চাকরির সুবাদে আব্দুর রহিম বিরামপুরে আসেন। তারপর সেখানে নতুন বাজার এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি করে স্থায়ী হন। নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার জাহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মারা যান। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

বিশিষ্ট আইনজীবী ৬৫ বছর বয়সী নূরুল ইসলামের বাড়ি পঞ্চগড়ে। পঞ্চগড়-২ (বাদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হন তিনি। শাম্মী আক্তারেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। মিলন জানান, কুষ্টিয়ায় বিয়ে হয়েছিল তার বোনের। কিন্তু বনিবনা হয়নি। ২০১১ সালে বিচ্ছেদ ঘটে। ওই ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন শাম্মী। চাকরির পাশাপাশি আইন পেশায় নিজেকে তৈরি করতে থাকেন।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn